আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পানি ও বিদ্যুতের সংকট ঘিরে মাদাগাস্কারে তরুণদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সহিংস রূপ নিয়েছে। গত কয়েক দিনে পুলিশের গুলিতে অন্তত ২২ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বিক্ষোভকারী ছাড়াও সাধারণ পথচারী রয়েছেন। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে নিন্দা জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার টুর্ক এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এভাবে প্রাণহানি আমাকে গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।” তিনি কর্তৃপক্ষকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রক্ষার আহ্বান জানান এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও সরাসরি গুলি চালানোর কঠোর সমালোচনা করেন। একই সঙ্গে আটক বিক্ষোভকারীদের দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
রাজধানী আন্তানানারিভোর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্ল্যাকার্ড হাতে জাতীয় সংগীত গেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তরুণ-তরুণীরা। পরে শহরের বিভিন্ন সড়কে ইট, পাথর ও টেলিফোনের খুঁটি ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করেন তারা। স্থানীয় টিভি চ্যানেলগুলোর প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে ব্যারিকেড ভেঙে দিচ্ছে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করছে।
প্রতিবাদকারীরা প্রধানমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান এনটসে, তার মন্ত্রিসভা এবং প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনার পদত্যাগ দাবি করছেন। প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা অবশ্য স্বীকার করেছেন, শাসন ব্যবস্থায় কিছু ভুল হয়েছে এবং তিনি সংস্কারের উপায় খুঁজছেন।
আরও পড়ুন:
রয়টার্স জানিয়েছে, কেনিয়া ও নেপালের সাম্প্রতিক ‘জেন-জি আন্দোলন’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই মাদাগাস্কারের তরুণেরা আন্দোলনে নেমেছেন। কয়েক বছরের মধ্যে এটিই দেশটির সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ, যা প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার জন্য বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীতে বৃহস্পতিবার থেকে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কার বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিক্ষোভ ও অভ্যুত্থান প্রায় নিয়মিত ঘটনা। ২০০৯ সালের আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মার্ক রাভালোমানানা।
সূত্র: এএফপি, রয়টার্স