গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে উদ্বোধন হলো তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় সেতু। তবে উদ্বোধনের একদিন না যেতেই সেতুতে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর ঘটনা—চুরি গেছে প্রায় ৩০০ মিটার বৈদ্যুতিক ক্যাবল। ফলে সন্ধ্যার পর থেকেই অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে পুরো সেতু।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি ধরা পড়ে। এর আগে বুধবার নতুন এ সেতুটি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সেতুর ল্যাম্পপোস্টগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার চেষ্টা করা হলে বাতিগুলো জ্বলেনি। পরে অনুসন্ধানে দেখা যায়, হরিপুর পয়েন্ট থেকে সংযুক্ত বৈদ্যুতিক তার কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মিলন রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “ক্যাবল চুরি হওয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে উদ্বোধনের দ্বিতীয় দিনেই সেতুটি অন্ধকারে নিমজ্জিত।”
এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছেন। কেউ লিখেছেন, “সামান্য ক্যাবলের লোভ সামলাতে পারলাম না, দুঃখজনক।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “এভাবে চলতে থাকলে হয়তো একদিন ব্রিজ ভেঙে রডও চুরি হয়ে যাবে।”
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মাওলানা ভাসানী সেতু’। বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওফিড) অর্থায়নে নির্মিত এ সেতুর ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা।
সেতুটির দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ দশমিক ৬ মিটার। রয়েছে ২ লেন ও মোট ৩১টি স্প্যান। প্রকল্প বাস্তবায়নে সংযোগ সড়ক ও নদী শাসনসহ অধিগ্রহণ করা হয়েছে প্রায় ১৩৩ একর জমি।