November 4, 2025, 6:37 pm
Headline :
বাংলাবান্ধা সীমান্তে ১১৭ ফুটের স্ট্যান্ডে উড়লো লাল-সবুজ পতাকা বিএনপি নির্বাচনে জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন বিএনপিতে যোগ দিলেন মুগ্ধর যমজ ভাই স্নিগ্ধ ‘যথাসময়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে জামায়াত’: আমির টাইফুন কালমেগির তাণ্ডবে ফিলিপাইনে ২৬ জনের মৃত্যু নোয়াখালীতে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপি’র বই প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত ২ কোটি টাকার সম্পদ গোপন রাখায় কাস্টমস কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা ডিএসসিসির নতুন প্রশাসক নাগরিক সেবার মানোন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার আহ্বান ৩ শতাধিক বিচারককে জেলা জজ পদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ সেরা একাদশে ৫ অলরাউন্ডার, ভারতের তিনজন জায়গা পেয়েছেন

যমুনার চরে এখনো পণ্য পরিবহনে ভরসা ঘোড়ার গাড়ি

যমুনার চরে এখনো পণ্য পরিবহনে ভরসা ঘোড়ার গাড়ি

অনলাইন ডেস্ক:

গ্রামীণ জীবনের বহু ঐতিহ্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে। একসময় গ্রামবাংলার পথে-প্রান্তরে ছুটে চলত ঘোড়ার গাড়ি, যা যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম ছিল। আজ সেই দৃশ্য দেখা যায় কেবল দুর্গম চরাঞ্চলে, যেখানে আধুনিক যানবাহনের চলাচল সম্ভব নয়।

যমুনার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আজও ঘোড়ার গাড়িই প্রধান ভরসা মানুষের। উঁচু-নিচু, বালুময় আঁকাবাঁকা পথে যাত্রী বা মালামাল গন্তব্যে পৌঁছে দেয় এই পুরোনো বাহন। বর্ষাকালে নৌকা আর শুকনো মৌসুমে ঘোড়ার গাড়িই হয়ে ওঠে চরবাসীর জীবনের অংশ। পানি কমে যাওয়া যমুনার বুকজুড়ে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য চর, যার মধ্য দিয়ে চলে এই ঐতিহ্যবাহী বাহনের টগবগ শব্দ।

সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর, চৌহালী, শাহজাদপুর ও সদর উপজেলার চরাঞ্চলে প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ির ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। শহর থেকে নৌকায় আনা মালামাল ঘোড়ার গাড়িতে তুলে কয়েক কিলোমিটার বালুময় রাস্তা পেরোনো হয়।

সত্তর বছর বয়সী ঘোড়ার গাড়িচালক আমিনুল বলেন, আমরা চরের কৃষক মানুষ। বহু বছর ধরেই ঘোড়ার গাড়ি চালাই। ফসল ঘরে তোলা থেকে বাজারে নেওয়া—সবই করি এই গাড়িতে।

মেছড়া গ্রামের হোসেন আলী জানান, ফসল ঘরে তোলা হোক বা হাটে নিয়ে যাওয়া, ঘোড়ার গাড়ি ছাড়া উপায় নেই।

নদীপারের মুদি দোকানদার জাবেদ আলী বলেন, দোকানের মাল আনতে, আবার ভাড়াও বহন করতে ঘোড়ার গাড়িই ভরসা।

চর সয়াশেখার কৃষকরা জানান, বাড়ি থেকে কয়েক মাইল দূরে জমি, ঘোড়ার গাড়ি না হলে বোঝা মাথায় বা কাঁধে নিয়ে আসতে হয়। চৌহালীর তেগুরি চরের জহুরুল ইসলাম ও কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়ার বকুল শেখ জানান, প্রায় এক যুগ ধরে তারা এই গাড়ি চালাচ্ছেন। দৈনিক আয় ৮০০–৯০০ টাকা, যার ২০০–২৫০ টাকা খরচ হয় ঘোড়ার খাবারে। তবু এ আয়েই চলে সংসার।

কাওয়াকোলা ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সি বলেন, নদী তীরবর্তী বালুময় রাস্তাগুলোতে চলাচল বা পণ্য পরিবহনের জন্য একমাত্র যানবাহন ঘোড়ার গাড়ি আজও চলছে।

যমুনার চরে সূর্য অস্ত যাচ্ছে, নৌকার পাল নিস্তব্ধ হচ্ছে—তবু বালুর পথে ঘোড়ার গাড়ির টগবগ শব্দ আজও শোনা যায়। আধুনিকতার জোয়ারে যখন গ্রামীণ ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে, তখন এই গাড়িগুলো যেন সময়ের সাক্ষী হয়ে টিকে আছে যমুনার বুকজুড়ে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page