নিজস্ব প্রতিবেদক :
সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৫০ থেকে ১০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান।
তিনি জানান, ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভিসি বলেন, “ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছে। বর্তমানে তাদের ১১ জন শিক্ষার্থী আমাদের হেফাজতে রয়েছে। ড্যাফোডিলের উপাচার্য আসলে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে।” ভিসি আরও বলেন, সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, যানবাহন ও স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার পূর্ণ তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের ডিন বিমল চন্দ্র দাস জানান,
“এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কেউই চায় না। আমরা ক্ষতিপূরণ দেব এবং যারা এতে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিভাবে অস্ত্র হাতে এসেছে, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তাদের কয়েকটি বাসে আগুন দেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন, ক্যাম্পাসের স্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তাদের দাবি, এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) আসাদুজ্জামান জানান, সংঘর্ষের পর থেকে পুলিশ রাতভর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরাও হামলার শিকার হন, তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর অসতর্কভাবে থুতু ফেলার ঘটনায় ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থী ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি।
রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস’ হোস্টেলে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরাও জড়ো হন এবং পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা তিনটি বাস, একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেয় এবং প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর চালায়। বর্তমানে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শান্তিপূর্ণ সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে।