নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর শিয়ালবাড়ি এলাকার একটি কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ১২ দিন পর উদ্ধার হলো নিখোঁজ মার্জিয়া সুলতানার (১৮) মরদেহ। পরনের বোরকা দেখে মেয়েকে শনাক্ত করেন তার বাবা সুলতান মিয়া।
রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে পরিবারের সদস্যরা পুলিশের সহায়তায় গার্মেন্টস কারখানার তৃতীয় তলা থেকে অঙ্গার হয়ে যাওয়া মরদেহটি খুঁজে পান। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া এই লাশের পর অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে। তিনি বলেন, “লাশটি পুড়ে এতটাই বিকৃত ছিল যে ছেলে না মেয়ে বোঝা যাচ্ছিল না। পরে পরিবারের সদস্যরা পোশাক দেখে শনাক্ত করেন।”
মার্জিয়ার বাবা সুলতান মিয়া জানান, তাদের বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার গোল্লা রাজাপুর গ্রামে।
তার মেয়ে ও জামাই জয় মিয়া দুজনেই ওই গার্মেন্টসে কাজ করতেন। অগ্নিকাণ্ডের পর জয় মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হলেও মার্জিয়া ছিলেন নিখোঁজ।
তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমাদের বিশ্বাস ছিল, মর্জিয়ার লাশ ওই ভবনের ভেতরেই আছে। কিন্তু বারবার খোঁজার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে থানায় গিয়ে পুলিশের সাহায্যে আবার ভবনে ঢুকে তৃতীয় তলায় মেশিনের নিচে মেয়ের দেহ পাই। তার পরনের বোরকা দেখে চিনতে পারি।”
ঘটনার পর থেকে এলাকায় শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ভবনটি যথাযথভাবে তল্লাশি না করায় দেরিতে মরদেহটি উদ্ধার হয়েছে।
মার্জিয়া ও জয়—স্বামী-স্ত্রী দুজনই একই কর্মস্থলে কাজ করতেন। এক দুর্ঘটনায় দুজনেরই মৃত্যু এখন পুরো পরিবার ও এলাকাজুড়ে রেখে গেছে গভীর শোকের ছায়া।