আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর— ইতিহাসের সেই ভয়াল দিন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে আল কায়েদার জোড়া বিমান হামলায় কেঁপে ওঠে পুরো বিশ্ব। সেই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত হন সংগঠনটির নেতা ওসামা বিন লাদেন। এরপর থেকেই তাকে ধরতে মরিয়া হয়ে ওঠে মার্কিন সেনারা।
লাদেনকে খুঁজে বের করতে যুক্তরাষ্ট্র বিপুল অর্থ ও জনবল ব্যয় করে। জানা যায়, হামলার পর তিনি আফগানিস্তানের পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান করছিলেন। সেখানেই তাকে ঘিরে ধরেছিল মার্কিন বাহিনী। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্য কৌশলে হাতছাড়া হয়ে যান তিনি।
ঘটনার ১৪ বছর পর, সেই অভিযান ঘিরে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন সিআইএ-এর সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা জন কিরিয়াকু। ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “লাদেনের এক সহযোগী মার্কিন সেনাদের ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছিলেন— তিনি আল কায়েদারই সদস্য ছিলেন।”
কিরিয়াকুর দাবি, অভিযানে অনুবাদক হিসেবে থাকা ওই ব্যক্তি আসলে আল কায়েদার হয়ে কাজ করছিলেন। “আমরা ভেবেছিলাম, লাদেনকে ঘিরে ফেলেছি। তাকে পাহাড় থেকে নিচে নামতে বলা হয়, কিন্তু অনুবাদকের মাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে লাদেন জানায়— নারী ও শিশুদের নিরাপদে সরিয়ে দিতে হবে, তারপর তিনি আত্মসমর্পণ করবেন,” বলেন কিরিয়াকু।
রাতে মার্কিন সেনারা নারীদের ও শিশুদের বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু ভোরে আফগানিস্তানের টোরা বোরা গুহায় পৌঁছে দেখে, সবাই উধাও। লাদেনসহ জঙ্গিরা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছে।
কিরিয়াকুর ভাষায়, “লাদেন রাতের অন্ধকারে নারীর ছদ্মবেশে একটি ট্রাকের পেছনে চড়ে আফগানিস্তান ছাড়েন। যখন বিশ্বাসঘাতকতার খবর জানা যায়, তখন তারা অনেক দূর।”
এরপর প্রায় এক দশক ধরে লাদেনকে খুঁজে ফেরে যুক্তরাষ্ট্র। অবশেষে ২০১১ সালের ২ মে, পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে মার্কিন নেভি সিলসের অভিযানে নিহত হন ওসামা বিন লাদেন।
দীর্ঘ ১০ বছরের অনুসন্ধান, এক ব্যর্থতা থেকে এক সাফল্যের গল্প— যার পরিসমাপ্তি ঘটে ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ‘মানহান্ট’-এর সফল সমাপ্তিতে।