October 27, 2025, 12:29 pm
Headline :
বিএনপি তিন বছর আগে থেকেই সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছে: মঈন খান নির্বাচনের প্রস্তুতি ৯০-৯৫ শতাংশে: ইসি সচিব যুক্তরাষ্ট্রে ‘বেজবাবা’ সুমনের সঙ্গে মঞ্চ মাতালেন আসিফ আকবর পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি বিভাগ বন্ধ, কম শিক্ষার্থী ভর্তির কারণে জাপানে এক লাখ দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ কিবরিয়ার ৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, টাকার অঙ্ক ৩৮ লাখের বেশি ঢাবির জহুরুল হক হলে ধূমপান নিষিদ্ধ, মাদক সেবনে বহিষ্কার বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমলাদের দায়িত্ব কমানো হবে: আমীর খসরু ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সালমান এফ রহমানের সঙ্গে থাকা ১২ আসামির জামিন দীর্ঘ ২০ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন: পাকিস্তান বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে

ন্যায়ের পুনর্জাগরণ এখন সময়ের আহ্বান : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, “আইন কেবল নিয়মের সমষ্টি নয়; এটি জাতির নৈতিক বিবেকের প্রতিফলন। ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হলে রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়, আর ন্যায় ব্যর্থ হলে সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রও ভেঙে পড়ে।” শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

‘ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই নৈতিক দায়িত্ব’
প্রধান বিচারপতি বলেন, মানবতা যখন অবিচার ও রাষ্ট্রীয় দমননীতির শিকার হয়, তখন ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই নৈতিক দায়িত্বে পরিণত হয়। “মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা মানবজাতিকে নতুন নৈতিক চেতনায় উজ্জীবিত করেছিল। যখন রাষ্ট্র নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তখন ন্যায়ের জন্য লড়াই করা নৈতিকভাবে অপরিহার্য হয়ে পড়ে,” বলেন তিনি।

‘ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ ন্যায়ের সংগ্রাম’
বাংলাদেশের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, “১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন কেবল ভাষার নয়—এটি ছিল ন্যায়, মর্যাদা ও অস্তিত্বের অধিকারের আন্দোলন। একইভাবে ১৯৭১ সালে বাঙালি কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য নয়, বরং মর্যাদা, সমতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য যুদ্ধ করেছিল।”

বিচার বিভাগ সংস্কারে রোডম্যাপ ঘোষণা
বিচার বিভাগ সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি জানান, দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি একটি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা।
তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ হলো গত ১৫ মাসের কৌশলগত প্রচেষ্টা ও বহুপাক্ষিক আলোচনার ফল।” একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেন, “কোনো ধরনের অবিশ্বাস বা একতরফা আচরণ এই প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার ভিত্তিকে দুর্বল করতে পারে। বিচার বিভাগীয় স্বায়ত্তশাসনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সমন্বয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।”
‘আইন অধ্যয়ন ন্যায় প্রতিষ্ঠার সাধনা’
আইন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আইনের অধ্যয়ন কেবল পেশাগত প্রশিক্ষণ নয়; এটি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক অনন্ত সাধনা। প্রতিটি আইনের পেছনে রয়েছে একটি জীবন, আর প্রতিটি রায়ের পেছনে একটি ভাগ্য।”

তিনি আরও বলেন, “২১ শতকে দাঁড়িয়ে আমরা এখনো ঔপনিবেশিক কাঠামোর উত্তরাধিকার বহন করছি। তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ডেটা-নির্ভর ব্যবস্থাপনা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে বিচারব্যবস্থাকে আধুনিক করা জরুরি।”

‘ন্যায়ের পুনর্জাগরণই সময়ের আহ্বান’
বক্তব্যের শেষাংশে ড. রেফাত আহমেদ বলেন, “ন্যায়ের পুনর্জাগরণ এখন সময়ের আহ্বান। সংবিধানের স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার যেন প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছায়—এটাই আমাদের দায়িত্ব।”

উপাচার্যের আহ্বান : অ্যালামনাই সংগঠনকে আরও সক্রিয় করুন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। তিনি বলেন, “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষকে নিয়ে কাজ করে। মানব আচরণ অনিশ্চিত, তাই আইন তার মাধ্যমে সমাজকে সুশৃঙ্খল রাখে।” তিনি অ্যালামনাইদের উদ্দেশে বলেন, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। এটি দেওয়ার জায়গা, নেওয়ার নয়। ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন দিন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি এস.এ.-সহ অন্যান্য বিচারপতি, আইন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থীবৃন্দ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page