অনলাইন ডেস্ক:
ইসলামাবাদের অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে তালেবান-নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তান সরকার। পাকিস্তানের দাবি—ভারতের স্বার্থে সীমান্তে প্রক্সি যুদ্ধে জড়িয়েছে কাবুল। তবে আফগান কর্তৃপক্ষ এই বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলছে।
সম্প্রতি সীমান্ত অস্থিরতার পর পাকিস্তান অভিযোগ তোলে, ভারতে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর বিনিময়ে তালেবান পাকিস্তানবিরোধী কার্যক্রমে সহায়তা করছে। তবে আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি মুহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ জানিয়েছেন, তাদের পররাষ্ট্রনীতি সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কোনো দেশকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টি করা তাদের উদ্দেশ্য নয়। তিনি বলেন, “জাতীয় স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা হচ্ছে।”
পাকিস্তান এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছে। রাওয়ালপিন্ডিতে জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত একটি কর্মশালায় সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতায় হস্তক্ষেপ বা আগ্রাসনের প্রচেষ্টা হলে “দৃঢ় ও সিদ্ধান্তমূলক” জবাব দেওয়া হবে। পাশাপাশি বেলুচিস্তান ও সীমান্ত এলাকাজুড়ে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানোর ঘোষণাও দেন তিনি।
এদিকে অভিবাসন ইস্যুতেও উত্তেজনা তীব্র হচ্ছে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে অবৈধভাবে বসবাসকারী প্রায় ২২ হাজার আফগান নাগরিককে সম্প্রতি ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। সরকারি হিসাবে, চলতি বছরে তিন দফায় প্রায় ৬৫ হাজার আফগানকে সীমান্তে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রদেশটির আফগান শরণার্থী শিবিরগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতির মাঝেই কাবুলে আবারও পূর্ণাঙ্গভাবে দূতাবাস কার্যক্রম চালু করেছে ভারত। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর বন্ধ হওয়া মিশন নতুন করে চালুর মাধ্যমে দেশটি মানবিক সহায়তা, পুনর্গঠন ও উন্নয়ন সহযোগিতায় উপস্থিতি বাড়ানোর লক্ষ্য জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
সীমান্তে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক বাগযুদ্ধ এখনো অব্যাহত—যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।