আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘ন্যায্য বাণিজ্য চুক্তি’ করতে অস্বীকৃতি জানায়, তবে দেশটির পণ্যের ওপর ১৫৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে— এমন কড়া বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (২০ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে একটি সুষম বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই। আমি আশা করি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই বিষয়ে সহযোগিতা করবেন।”
শর্ত সোজা: চুক্তি অথবা শুল্ক :
ট্রাম্প স্পষ্ট জানান, যদি চীন আলোচনায় বসে চুক্তিতে আসে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও নমনীয় হবে। অন্যথায়, চীনা পণ্যের ওপর ১৫৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হবে। “বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের বাজার থেকে অন্যায্য সুবিধা নিচ্ছে, এটা চলতে পারে না,” — বলেন ট্রাম্প।
পুরনো উত্তেজনার নতুন ধাপ:
গত আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন চীনা পণ্যে শুল্ক ৩০% থেকে বাড়িয়ে ১৪৫% করেছিল। জবাবে চীনও মার্কিন পণ্যে শুল্ক ১২৫% পর্যন্ত বাড়ায়। পরবর্তীতে দুই দেশ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক আরোপ স্থগিত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই সময়সীমা নভেম্বরেই শেষ হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সময় শেষ হওয়ার আগে যদি দুই পক্ষ আলোচনায় সমঝোতায় না আসে, তবে নতুন করে উত্তপ্ত বাণিজ্যযুদ্ধের ঝুঁকি বাড়বে।
ট্রাম্পের চীন সফর ও বৈঠকের সম্ভাবনা:
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ২০২৬ সালের শুরুতে চীন সফরে যাবেন। তার আগে, ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ায় শুরু হতে যাওয়া এপেক সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্মেলনের ফাঁকেই দুই নেতার মধ্যে ব্যাপক আলোচনার সম্ভাবনা দেখছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি ও বার্তা:
২০১৭ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য ছিল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি বাস্তবায়ন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, আমেরিকান কৃষকদের সুরক্ষা, ও ঘরোয়া শিল্পের উন্নয়ন তার মূল অগ্রাধিকার। এবার তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরে এসে সেই পুরোনো লাইনেই হাঁটছেন—চীনের সঙ্গে চুক্তি নয়তো চাপ।