গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় আজেনা বেগম রোজিনা (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু ঘিরে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি অসুস্থ ছাগল জবাই করার সময় হাড়ের আঘাতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
স্থানীয়দের ধারণা, রোজিনা অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, আগে থেকেই থাকা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে তার মৃত্যু হয়। পরদিন রোববার জানাজা শেষে পশ্চিম বেলকা গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
স্থানীয়দের ভাষ্য, জবাইয়ের সময় আহত হওয়ার পর তার হাতে ফোঁসকা দেখা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে রংপুর মেডিক্যালে নিলে তিনি মারা যান।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ বলেন, “রোজিনা অ্যানথ্রাক্সে মারা গেছেন কি না, নিশ্চিত হওয়া যায়নি, কারণ কোনো পরীক্ষা হয়নি। তবে তার ইউনিয়নে অন্তত ১১ জন বর্তমানে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে ভুগছেন।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিবাকর বসাক জানান, “ওই নারীর হাতে ক্ষুদ্র ফোঁসকা, রক্তচাপ কমে যাওয়া ও শ্বাসকষ্ট ছিল। তাই তাকে রংপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। তার মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে হয়েছে কি না, তা পরীক্ষার পর জানা যাবে।”
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে অন্তত ২৫ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে আক্রান্ত হয়েছেন। একই সময়ে শতাধিক গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে।
অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন টিকাদান কর্মসূচি, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও সচেতনতামূলক সভা শুরু করেছে। আক্রান্ত পশু জবাই না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে—রোজিনার মৃত্যু অ্যানথ্রাক্সে নয়; তিনি পূর্ববর্তী রোগে ভুগছিলেন। গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে সাধারণ মানুষকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।