আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ। বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে জালিয়াতির অভিযোগ এবং কোটি কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ক্ষুব্ধ জনতা এই আন্দোলনে অংশ নেন।
বিক্ষোভ ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কায় আগের রাত থেকেই সেনা ও পুলিশ সতর্ক অবস্থায় ছিল। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ম্যানিলার লুনেটা পার্কে সকালে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুন। শ্লোগানে শ্লোগানে তারা দুর্নীতিবাজদের বিচারের দাবি জানান। অনেক ব্যানারে লেখা ছিল—“আর নয়, অনেক হয়েছে, কারাগারে পাঠাও।”
ছাত্র আন্দোলনকর্মী আলথিয়া ট্রিনিদাদ বিক্ষোভ মঞ্চে বলেন, “আমরা দারিদ্র্যের মধ্যে বেঁচে আছি, অথচ আমাদের করের টাকায় তারা বিলাসবহুল গাড়ি কেনে, বিদেশ ভ্রমণ করে। আমাদের ঘরবাড়ি, জীবন আর ভবিষ্যৎ ধ্বংস হচ্ছে—এটা সহ্য করা যায় না।”
এএফপি জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মারকোস জুনিয়র তার বার্ষিক ভাষণে “ভূতুড়ে অবকাঠামো প্রকল্প” কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন। এরপর থেকেই জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ৯ হাজার ৮৫৫টি বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা হয়। প্রকল্পগুলোর ব্যয় ছিল ৫৪৫ বিলিয়ন পেসো (৯.৫ বিলিয়ন ডলার)।
এ ঘটনায় দেশটির ধনকুবের দম্পতি সারা ও প্যাসিফিকো ডিসকায়ারের নাম উঠে আসে। তাদের মালিকানাধীন নির্মাণ কোম্পানিগুলোই প্রকল্পের বড় অংশের চুক্তি পায়। পরবর্তীতে বিলাসবহুল ইউরোপীয় ও মার্কিন গাড়ি ও এসইউভির মালিকানা প্রকাশ্যে আসায় জনরোষ আরও বাড়তে থাকে।
প্রেসিডেন্ট মারকোস বিক্ষোভকারীদের আন্দোলনকে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জনগণকে শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমি এ বিক্ষোভকে দোষারোপ করি না, তবে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানানো জরুরি।” সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।