আন্তর্জাতিক খবর
গাজা শহরে সোমবার রাতভর ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস ও জেরুজালেম পোস্ট জানায়, গাজা পুরোপুরি দখলের উদ্দেশ্যে ইসরায়েল স্থল অভিযানে নেমেছে। যদিও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
গাজার মধ্যাঞ্চলেও বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত হয়েছে রাত। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, নিহত ও আহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গাজা, যেখানে লাখ লাখ বেসামরিক মানুষের বসবাস, সেখানে ইসরায়েল বহুদিন ধরে পূর্ণমাত্রার অভিযান চালানোর হুমকি দিয়ে আসছিল।
মঙ্গলবার ভোরে এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ লিখেছেন, ‘গাজা পুড়ছে। আমরা থামবো না, পিছিয়ে যাবো না—যতক্ষণ না মিশন সম্পন্ন হয়।’
স্থানীয় সাংবাদিকদের মতে, গাজা শহরে রাতজুড়ে বিমান হামলা, কামানের গোলা ও গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শহরের বাসিন্দাদের দক্ষিণে সরিয়ে যেতে বলেছে। সেনাবাহিনীর হিসাব অনুযায়ী, ইতোমধ্যে প্রায় ২.৫ লাখ ফিলিস্তিনি শহর ছেড়ে গেছে, তবে আরও লাখো মানুষ এখনো সেখানে আটকা। যাঁরা দক্ষিণে গেছেন, তাদের অনেকেই জানিয়েছেন, সেখানেও বিমান হামলা থেমে নেই। কেউ কেউ আবার ফিরে এসেছেন, কারণ তাঁবু বসানোর জায়গাও সেখানে নেই।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “এই সংঘাতের কূটনৈতিক সমাধানের সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। হামাসকে ধ্বংস করতেই হবে।” বৈঠক শেষে তিনি কাতারের উদ্দেশে রওনা হন, যেখানে আরব নেতারা ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যার অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। জাতিসংঘ-সমর্থিত সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে এবং সতর্ক করেছে—যুদ্ধ তীব্র হলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।