প্রিয়াংকা সাহা:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের বিরোধে চলমান আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। এ মামলায় নাম উল্লেখ করে ৯০ জন এবং আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে মামলাটি দায়ের করেন। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে সর্বদলীয় ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক ও আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক মিয়াকে (৬০)। শনিবার গভীর রাতে নগরকান্দার চাঁদহাট এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে। ২ নম্বর আসামি হামিরদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খোকন মিয়া।
মামলার অভিযোগ
এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে ম ম সিদ্দিক মিয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন আন্দোলনকারী আলগীর সোয়াদী এলাকায় জড়ো হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে অবরোধ করেন। তারা মহাসড়কে গাছ ফেলে ও টায়ারে আগুন ধরিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং যান চলাচল বন্ধ করেন। পুলিশ বাধা দিলে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে, তবে ধাওয়া করলে সরে যায়।
আন্দোলনের পটভূমি
ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদি ইউনিয়নকে কেটে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার প্রতিবাদে টানা বিক্ষোভ করছে স্থানীয়রা। এর ধারাবাহিকতায় গত পাঁচ দিনে তিন দফায় ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবরোধ পালিত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে
বর্তমানে মহাসড়ক ও রেলপথে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ভাঙ্গার ২০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন ও সেনা সদস্য মোতায়েন রাখা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে টহল টিমও মাঠে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত
গত ৪ আগস্ট প্রকাশিত নির্বাচন কমিশনের গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসনের দুটি ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনে সংযুক্ত করা হয়। এর পর থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।