নোয়াখালী সংবাদদাতা
নোয়াখালীর সেনবাগ, চাটখীল ও সোনাইমুড়ীতে বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে সেনবাগ উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন উপজেলা বিএনপির নেতা আলহাজ্ব কাজী মফিজুর রহমান গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন কাজী মফিজুর রহমানের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি সেনবাগ বাজার প্রদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ মার্কেট পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় একই স্থানে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিক্ষোভকারীরা নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিকে “বিতর্কিত” আখ্যা দিয়ে তা অবিলম্বে বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণার দাবি জানান। নেতাকর্মীরা শ্লোগান দেন— “অযোগ্য কমিটি মানি না, মানি না, ত্যাগীদের বঞ্চনা চলবে না, চলবে না।”
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ডমুরুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান সমীর, অর্জুনতলা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মো. হোসেন, ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের নেতা গোলাম হোসেনসহ আরও অনেকে। বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামে যারা আওয়ামী লীগের দমন-নিপীড়ন সহ্য করে দলকে টিকিয়ে রেখেছেন, সেই ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করা হয়েছে। অথচ আন্দোলনে অনুপস্থিত বা অন্য রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর ও সদস্য সচিব মো. হারুনুর রশিদ আজাদের স্বাক্ষরিত কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। ঘোষণার পর থেকেই দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়।
একইদিন চাটখীলেও কমিটি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন অনেক নেতাকর্মী। তারা অভিযোগ করেন, ৫৩ সদস্যের কমিটিতে ত্যাগী ও দীর্ঘদিন সংগ্রামে থাকা ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতি ও সম্পাদক যারা পদাধিকার বলে কমিটিতে থাকার কথা ছিল, তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বিএনপি নেতা আবুল কাশেম মিন্টু বলেন, “যারা আন্দোলন-সংগ্রামে কখনো মাঠে ছিল না, তারাও আজকে কমিটিতে স্থান পেয়েছে। এতে মনে হয় আর্থিক লেনদেন বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতেই এ কমিটি করা হয়েছে।”
এমনই অভিযোগ উঠেছে সোনাইমুড়ীতেও। স্থানীয় নেতারা জানান, এখানেও বহু অযোগ্য ব্যক্তিকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি বীমা কোম্পানির চাকরিজীবী লুৎফুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে, যাকে কখনোই বিএনপির কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। অন্যদিকে, দশ ইউনিয়নের সভাপতি-সম্পাদকসহ বহু পদাধিকারী নেতাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
নেতাকর্মীদের দাবি, ত্যাগী, পরীক্ষিত ও মাঠে থাকা নেতাদের মূল্যায়ন না করে এমন কমিটি গঠন করলে দল আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। তারা দ্রুত এই কমিটি বাতিল করে যোগ্য ও ত্যাগীদের নিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণার আহ্বান জানান।