নিজস্ব প্রতিবেদক
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা হারিয়েছে এক বছর আগে। নিষিদ্ধ হয়েছে দল ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ। তবুও প্রশাসনে দলটির প্রভাব এখনো টিকে আছে—এমন অভিযোগ বহুদিনের। তারই সর্বশেষ প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরীর পদোন্নতিকে।
চট্টগ্রামের আওয়ামী পরিবারে জন্ম নেওয়া ড. নাজনীনকে ২৬ আগস্ট সচিব পদে উন্নীত করে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সচিব পদমর্যাদার এ নিয়োগকে ঘিরে শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা।
ড. নাজনীন এমন এক পরিবারের কন্যা, যার রাজনৈতিক পরিচয় সুস্পষ্ট। তার বাবা বদিউল আলম চৌধুরী ছিলেন ভাষাসংগ্রামী, মুক্তিযোদ্ধা এবং শেখ মুজিবুর রহমান ও সোহরাওয়ার্দীর ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা। ভাই মনোয়ার উল আলম নোবেল চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। খালা জোবাইরা নার্গিস খান আছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে।
তবে এসব পারিবারিক যোগসূত্রই বিতর্ককে ঘনীভূত করেছে। বিশেষ করে ভাই নোবেলকে ঘিরে। আলোচিত জোড়া খুন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি, যার বিরুদ্ধে জমিদখল, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার মতো অভিযোগও রয়েছে।
আরেক দফা আলোচনায় আসে ২০২২ সালে তৎকালীন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের একটি চিঠি। সেখানে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল—ড. নাজনীন আওয়ামী পরিবারের সন্তান, তাই তাকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা উচিত। ওই সুপারিশপত্র এখন সামাজিক মাধ্যমে নতুন করে ভাইরাল হয়েছে।
ড. নাজনীন দীর্ঘদিন প্রশাসনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন, কাজ করেছেন বাংলাদেশ চা বোর্ড ও ব্রাসেলসের বাংলাদেশ দূতাবাসেও। কিন্তু অভ্যুত্থানের পরেও তার মতো আওয়ামী ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যের পদোন্নতি—প্রশাসনে দলীয় প্রভাব এখনো সক্রিয়—এই ব্যাখ্যাই দিচ্ছেন অনেক কর্মকর্তা। সূত্র: আমার দেশ