আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি বিমান ও স্থল অভিযানে আবারও ভয়াবহ প্রাণহানি ঘটেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা ও গুলিতে অন্তত ৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন এবং বাকি ২৮ জন সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হয়েছেন, যখন তারা খাদ্য সংগ্রহ করছিলেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন, কিন্তু সীমিত সরঞ্জাম ও জনবলের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
সামগ্রিক পরিস্থিতি
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের টানা অভিযানে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৭৪৪ জনে। আহত হয়েছেন এক লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন।
এদিকে, গত জুনে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি হলেও চলতি বছরের মার্চে সেটি ভেঙে ফের আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাসে ১০ হাজার ৯০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ।
ত্রাণকেন্দ্রেও হামলা
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ নিতে যাওয়া সাধারণ মানুষদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২৩ জন এবং আহত হয়েছেন ১৫ হাজার ৬০০ জনের বেশি।
সংঘাতের সূত্রপাত
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের ভেতরে আকস্মিক হামলা চালালে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর জবাবেই ইসরায়েল গাজায় টানা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলের দাবি, এখনও অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন জিম্মি জীবিত আছেন এবং তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি