আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা সিটির আরও ভেতরে প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি সেনারা। এ সময়ের হামলায় শনিবার (২৩ আগস্ট) অন্তত ৬৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে।
আল-জাজিরা অ্যারাবিক প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি ট্যাংক সাবরা এলাকায় ঢুকে পড়েছে। এই অঞ্চলটি জেইতুনের নিকটবর্তী, যা গত এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলার শিকার।
দিনের শুরুতে খান ইউনিসের উত্তর-পশ্চিমের আসদা এলাকায় বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর তাঁবুতে গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি সেনারা। এতে অন্তত ১৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জন শিশু।
একই দিনে মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হন আরও ২২ জন ফিলিস্তিনি। এছাড়া ‘মোরাগ অ্যাক্সিস’ ও নেতজারিম করিডরের কাছে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন আরও দুজন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও আটজন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে দুজন শিশু। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮১ জনে, যার মধ্যে অন্তত ১১৪ শিশু।
শুক্রবার জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ বলে উল্লেখ করেন। আইপিসি-র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ ১৪ হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষে ভুগছে, যা সেপ্টেম্বর নাগাদ ৬ লাখ ৪১ হাজারে পৌঁছাতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতিসংঘের ঘোষণা প্রশংসনীয় হলেও তা এসেছে দেরিতে। তাদের অভিযোগ, অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে—যার মধ্যে স্বাস্থ্য খাত ধ্বংস, গণহত্যা ও প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন করার কৌশলও অন্তর্ভুক্ত।
গত ২৭ মে থেকে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে নিজস্ব সহায়তা সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করেছে। তবে জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো এটিকে ‘অবৈধ ও মানবিক নীতিবিরোধী’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ব্যবস্থার আওতায় সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭৬ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজার ৬০০ ছাড়িয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা