October 29, 2025, 1:27 pm
Headline :
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা ‘প্রতারণামূলক’: মির্জা ফখরুল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে আপিলের চূড়ান্ত শুনানি ২ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি পোশাক নিয়ে কটুক্তি, জুতাপেটা করলেন তরুণী: ভাইরাল ভিডিও ‘অন্তর্বর্তী সরকার অন্য দলের সঙ্গে প্রতারণা করেছে’ — নুরুল হক নুর ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর পুলিশের জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড, আহত অন্তত ৪৩ জন “সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে— খায়রুল আলম রফিক” জাতীয় নাগরিক পার্টি সরকারের প্রতি ৩ আহ্বান জানালো গাজা গণহত্যায় ৬০-এর বেশি দেশের জড়িত থাকার অভিযোগ, জাতিসংঘে বিস্ফোরক প্রতিবেদন এনসিপির সঙ্গে জোট গুঞ্জন খণ্ডন করল গণঅধিকার: রাশেদ খানের মন্তব্য হাসিনার প্লট দুর্নীতি মামলায় সাবেক রাজউক সদস্য খুরশীদের আত্মসমর্পণ

’’সাবেক সচিবের গাড়িচালকের পুকুরে যেতে ৩১ লাখ টাকার সরকারি সেতু’’

’’সাবেক সচিবের গাড়িচালকের পুকুরে যেতে ৩১ লাখ টাকার সরকারি সেতু’’

জেডটিভি বাংলা ডেস্ক:

বরগুনার ডামুড্যা উপজেলায় জনবসতি বা যাতায়াতের প্রয়োজন না থাকলেও নির্মাণ করা হয়েছে একটি সরকারি সেতু—যার মূল উদ্দেশ্য ছিল নাকি একজন সাবেক সচিবের গাড়িচালকের নিজস্ব পুকুরে প্রবেশের সুবিধা তৈরি করা। স্থানীয়দের অভিযোগ, জনগুরুত্বহীন এই প্রকল্প রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় ও ক্ষমতার অপব্যবহারের জ্বলন্ত উদাহরণ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে “মিউনিসিপাল সাপোর্ট অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (MSRDP)”-এর আওতায় চরধানকাটি আদাসন দরবার শরীফ সড়কের মাঝামাঝি স্থানে নির্মাণ করা হয় এই বক্স কালভার্ট সেতু। ৩১ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে কাজটি সম্পন্ন করে মিনহাজ ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

তবে সরেজমিন দেখা যায়, সেতুটি এমন এক খালের ওপর তৈরি—যার ওপাশে কোনো বসতবাড়ি নেই, রয়েছে কেবল একটি বড় পুকুর। জানা গেছে, ওই পুকুরের মালিক মোকসেদ সরদার, যিনি তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের গাড়িচালক ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, ভবিষ্যতে ওই পুকুরপাড়ে বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা থাকায় সুপারিশ ও প্রভাব খাটিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ সুমন বলেন, ৩১ লাখ টাকা নষ্ট করে শুধু পুকুরের সামনে ব্রিজ করেছে। মানুষ চলাচল করে না, রাস্তা নেই—এটা একেবারেই অন্যায়।”

আরেক বাসিন্দা ইব্রাহিম মোড়ল বলেন, ব্রিজের সামনে পুকুর ছাড়া কিছুই নেই। অথচ পাশে খালের ওপারে গ্রামবাসী সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে। সরকারের এই টাকায় যদি সেখানে ব্রিজ বানানো হতো, সবাই উপকৃত হতো।”

প্রতিবেদনের চিত্র সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের সামনে আসেন ওই গাড়িচালক মোকসেদ সরদার। প্রশ্নের মুখে তিনি সরাসরি কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, আমি এখানে বাড়ি নির্মাণ করবো, এরপর দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

ডামুড্যা উপজেলা প্রকৌশলী আবু নাঈম নাবিল বলেন, উপজেলা থেকে আমরা এ ধরনের কোনো প্রস্তাব পাঠাইনি। সচিবের তদবিরে প্রকল্পটি অনুমোদন পেয়েছে। পিডি অফিস থেকে সরাসরি ফোন পেয়ে বাধ্য হয়েই বাস্তবায়ন করি।”

অন্যদিকে জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি ব্যক্তিস্বার্থে নয়, বরং পাশ দিয়ে একটি রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ছিল বলেই নির্মাণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পরামর্শেই এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয়।

তিনি আরও যোগ করেন, যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন আছে—আমরা করেছিলাম। তবে তখন জানানো হয়েছিল, ওই দিক দিয়ে রাস্তা তৈরি হবে।

স্থানীয়দের মতে, এই ব্রিজ এখন “ব্যক্তিগত প্রবেশপথে সরকারি বিনিয়োগের নিদর্শন”, যা ভবিষ্যতে প্রশাসনিক জবাবদিহিতা ও সরকারি প্রকল্প যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে।

সূত্র: জাগোনিউজ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page