আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলের দেশ এস্তোনিয়ার রুশ সীমান্তের কাছে মার্কিন সেনাঘাঁটির উপরে কয়েকটি অজ্ঞাতপরিচয় ড্রোন উড়তে দেখা গেছে। এর মধ্যে অন্তত একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে এস্তোনিয়ান সেনারা। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এস্তোনিয়ার ক্যাম্প রিডো নামের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে, যেখানে বর্তমানে মার্কিন সেনাবাহিনীর ৭ম ক্যাভালরি রেজিমেন্টের ৫ম স্কোয়াড্রন মোতায়েন রয়েছে। এই ইউনিটটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৩০তম ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের সেনাদের প্রতিস্থাপন করে সেখানে আসে।
এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লিস ভাকসম্যান স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পোস্টম্যান-কে বলেন, “১৭ অক্টোবর বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে মিত্র বাহিনীর (মার্কিন) ২য় ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড ক্যাম্পের আশপাশে একাধিক ড্রোন শনাক্ত করে। তাদের মধ্যে একটি ড্রোন অ্যান্টি-ড্রোন রাইফেল দিয়ে গুলি করে নামানো হয়।” তবে তিনি আরও জানান, ভূপাতিত ড্রোনটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর ন্যাটো পূর্ব ইউরোপের সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। জোটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ সম্ভাব্য গুপ্তচরবৃত্তি বা সীমান্ত-লঙ্ঘন ঠেকাতে “সতর্ক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা” হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
এটি প্রথম নয়—সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপের পূর্ব সীমান্তে একাধিকবার রহস্যজনক ড্রোনের ঘটনা ঘটেছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড অভিযোগ করে, এক ডজনেরও বেশি ড্রোন তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। দেশটি এর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করে। এর এক সপ্তাহ পর, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক জানান, রাজধানী ওয়ারশ শহরের সরকারি ভবনের ওপর ড্রোন ওড়ানোর অভিযোগে দুজন বেলারুশ নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
মস্কো অবশ্য এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়া দাবি করে, তিনটি রুশ মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান তাদের আকাশসীমায় ঢুকে প্রায় দশ মিনিট অবস্থান করেছিল। কিন্তু রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ওই ফ্লাইট “আন্তর্জাতিক আইনের সম্পূর্ণ অনুসরণে পরিচালিত হয়েছে” এবং “কোনো দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা হয়নি।” সর্বশেষ এই ড্রোন ঘটনার বিষয়ে এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ন্যাটো ও এস্তোনিয়া উভয়েই ঘটনাটিকে “অত্যন্ত উদ্বেগজনক নিরাপত্তা ইঙ্গিত” হিসেবে দেখছে।
সূত্র: মেহের নিউজ