নিজস্ব প্রতিবেদক :
গাজীপুরের টঙ্গীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মিয়াজী অবশেষে স্বীকার করেছেন যে, তাঁর ‘অপহরণ’ আসলে ছিল নিজের তৈরি একটি নাটক। সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করেন।
সেদিন রাত ১২টার দিকে ইসলামি বক্তা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী ফেসবুক লাইভে আসেন। লাইভ চলাকালে তিনি ফোনে মুহিব্বুল্লাহর মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন। মেয়েটি জানান, তাঁর বড় ভাইয়ের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন— তাঁদের বাবা স্বীকার করেছেন যে সবকিছুই তিনি নিজের ইচ্ছায় করেছেন।
রাত আড়াইটার দিকে বিক্রমপুরী আবার লাইভে আসেন। সে সময় তাঁর সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ হয়। পুলিশ তাঁকে জানায়, চাইলে তিনি মসজিদের ভেতরে যেতে পারেন, তবে সঙ্গে সর্বোচ্চ একজন মুরিদ নিতে পারবেন। বিক্রমপুরী তাতে রাজি হননি। ঠিক সেই সময় তাঁর মোবাইলে ফোন আসে মুফতি মুহিব্বুল্লাহর ছোট ছেলের কাছ থেকে, যিনি নিজেও একজন আলেম। ফোনে মুহিব্বুল্লাহ নিজেই বলেন, “আমি নিজেই সব করেছি। নিজের পরিকল্পনায় পঞ্চগড়ে গিয়েছি, গুম হওয়ার অভিনয় করেছি, ঘটনাটি ভাইরাল করেছি। তাই তোমরা আর বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।”
এর আগে মুফতি মুহিব্বুল্লাহ, যিনি সামাজিক মাধ্যমে ‘মুফতি মুহিব্বুল্লাহ মাদানী’ নামেই বেশি পরিচিত, দাবি করেছিলেন যে তাঁকে গত ২২ অক্টোবর সকাল ৭টার দিকে টঙ্গীর শিলমুন এলাকার একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়।
তিনি বলেছিলেন, একদল ব্যক্তি তাঁকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যায় এবং পরদিন পঞ্চগড়ে তাঁকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। এমনকি তিনি দাবি করেছিলেন, অপহরণের আগে টানা কয়েকদিন ধরে হুমকিমূলক উড়ো চিঠি পেয়েছিলেন এবং অপহরণের পর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।
ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেক অনুসারী ও ইসলামি বক্তা তাঁর নিরাপত্তা দাবি করে পোস্ট দেন। কিন্তু তাঁর স্বীকারোক্তির পর পুরো বিষয়টি নতুন মোড় নেয়।
বর্তমানে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে—মুফতি মুহিব্বুল্লাহর এই ‘অপহরণ নাটক’ কেন ও কী উদ্দেশ্যে সাজানো হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।