নিজস্ব প্রতিবেদক :
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার বাড়িতে ফাঁসির দড়ি হাতে হাজির হয়েছেন এক যুবক। এমন ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) উপজেলার চালা ইউনিয়নের কৌড়ি গ্রামে। প্রেমিকের নাম রবিউল হাসান রবি (২৮), পেশায় ঠিকাদার, বাড়ি উত্তর মেরুন্ডি এলাকায়। আর প্রেমিকা তাহমিনা মিম (২১) মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী এবং স্থানীয় প্রবাসী আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে।
তিন মাসের প্রেম থেকে নাটকীয় মোড় :
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন মাস আগে রবিউল ও মিমের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পারিবারিকভাবে সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পরিবারই বিয়েতে সম্মতি দেয়। কিন্তু সম্প্রতি মিম অজ্ঞাত কারণে বিয়ে থেকে সরে যান। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রবিউল।
শেষ পর্যন্ত তিনি ফাঁসির দড়ি নিয়ে মিমের বাড়িতে হাজির হন এবং অনশনে বসে পড়েন। তিনি ঘোষণা দেন, “মিম যদি আমাকে বিয়ে না করে, তাহলে এখানেই আত্মহত্যা করব।” এলাকাবাসীর ভিড়, পরে সমাধান ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষ ভিড় জমায়। স্থানীয়রা পরে রবিউলকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এ সময় ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
প্রেমিক–প্রেমিকার বক্তব্য :
রবিউল সাংবাদিকদের বলেন, “মিম আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক গভীর করেছে। এখন সে বেঁকে বসেছে। এতে আমার মানসম্মান ঝুঁকিতে পড়েছে। মিম আমাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোনো পথ নেই।” অন্যদিকে মিম দাবি করেন, “রবিউলের সঙ্গে কেবল কথাবার্তা হয়েছিল, প্রেম বা বিয়ের সম্পর্ক ছিল না। সে ইচ্ছে করেই আমাদের পরিবারের সুনাম নষ্ট করতে চায়। আমি তাকে বিয়ে করব না।”
পরিবারের উদ্বেগ :
মিমের মা পারভীন আক্তার বলেন, “আমার মেয়ে রাজি নয়। তাই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমি ভয়ে আছি, ছেলেটি যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ না করে।”
স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা :
চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাস বলেন, “মেয়ের পরিবার রাজি না থাকলে বিয়ের প্রশ্নই আসে না। স্থানীয়রা বিষয়টি আপাতত শান্তভাবে মীমাংসা করেছেন। প্রয়োজনে আমরা পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে বসব।”
সংক্ষেপে:
তিন মাসের প্রেমে বিয়ের প্রতিশ্রুতি, হঠাৎ বিচ্ছেদ, আর তাতেই হতাশ প্রেমিকের নাটকীয় অনশন— এমন ঘটনা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মানিকগঞ্জের কৌড়ি গ্রাম।