আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রাশিয়ার দুটি শীর্ষ তেল কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর বৈশ্বিক বাজারে হঠাৎ তেলের দাম বেড়ে গেছে প্রায় ৫ শতাংশ। ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বুধবার ঘোষণার পরপরই লন্ডনভিত্তিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৪.৯ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৫.৬৫ ডলারে পৌঁছেছে—যা গত দুই সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি জায়ান্ট রসনেফট এবং বেসরকারি তেল কোম্পানি লুকঅয়েল। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তাদের সব সম্পদ জব্দ করা হয়েছে এবং মার্কিন নাগরিক ও কোম্পানির জন্য এই দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ওয়াশিংটন সতর্ক করেছে, রসনেফট ও লুকঅয়েলের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখা বিদেশি ব্যাংকগুলোও “দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা”র মুখে পড়তে পারে। এতে চীন, ভারত ও তুরস্কের ব্যাংকগুলোর ওপরও প্রভাব পড়তে পারে, যারা রুশ তেল বাণিজ্যে সক্রিয়।
রয়টার্সের তথ্যমতে, ভারতের শীর্ষ আমদানিকারক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ ইতিমধ্যে রুশ তেল আমদানি কমানোর বা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় বাজারে জ্বালানি কোম্পানি শেল ও বিপি-এর শেয়ারমূল্য প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে।
এটি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম রাশিয়া-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “এগুলো বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা, তবে আমরা চাই না এগুলো দীর্ঘস্থায়ী হোক। আশা করি যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই পুতিন ও জেলেনস্কি দুজনেই সংলাপে বসুন। যুদ্ধ নয়, আলোচনাই একমাত্র সমাধান।”
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়া থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, “যুদ্ধ থামাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সহায়তা করতে প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমাদের মিত্রদেরও এই নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে আহ্বান জানাচ্ছি।”
বিশ্লেষকদের মতে, জুলাইয়ের পর এটি তেলের দামের সবচেয়ে বড় একদিনের উল্লম্ফন, যা বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে নতুন অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।