আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে পূর্বঘোষিত বৈঠক বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার অনাগ্রহের কারণে এই বৈঠক ‘সময়ের অপচয়’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গত সপ্তাহেই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) হোয়াইট হাউস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক স্থগিতের ঘোষণা আসে।
‘ফলহীন আলোচনার দরকার নেই’—ট্রাম্প :
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমি কোনো ফলহীন বৈঠক করতে চাই না। সময় নষ্টের কিছু নেই। যুদ্ধ থামানোর কোনও সদিচ্ছা রাশিয়ার নেই—এই অবস্থায় আলোচনা অর্থহীন।” মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের মধ্যে সাম্প্রতিক এক ফোনালাপের পরই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি আরও জানান, নিকট ভবিষ্যতে পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের কোনো পরিকল্পনাও নেই।
ইউরোপের জন্য স্বস্তির বার্তা :
ট্রাম্পের এই অবস্থান ইউরোপীয় নেতাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির বার্তা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা জোটের অবস্থান বরাবরই ছিল কঠোর। ইউরোপের নেতারা আগে থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে, কূটনৈতিক আলোচনার নামে রাশিয়া সময় কিনে যুদ্ধক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির নেতারা বারবার বলেছেন, এমন কোনও চুক্তির পক্ষে তারা নন, যাতে ইউক্রেনকে রুশ দখলকৃত এলাকা ছেড়ে দিয়ে শান্তি চুক্তির চাপে পড়তে হয়—যা ট্রাম্প সম্প্রতি একাধিকবার পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছেন।
জব্দ সম্পদ দিয়েই সহায়তা পরিকল্পনা :
ইউক্রেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় অর্থ সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইউরোপীয় নেতারা এখন রাশিয়ার জব্দ করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন। তবে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক আইনি জটিলতা ও ভবিষ্যৎ প্রভাব নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়ে গেছে।
পর্যালোচনা :
ট্রাম্প প্রশাসনের বৈঠক বাতিলের এই সিদ্ধান্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্কেই নয়, বরং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সমাধান নিয়েও নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। ট্রাম্পের ভাষায়—“যখন ফল নেই, তখন বৈঠক নিরর্থক।”