আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস এখনই অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি নয়। সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ নাজ্জাল বলেছেন, হামাসের বর্তমান অগ্রাধিকার হলো যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা পুনর্গঠন—নিরস্ত্রীকরণ নয়।
দোহায় রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাজ্জাল বলেন, “আমরা গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সময়ে নিজেদের হাতে রাখতে চাই। অস্ত্র হস্তান্তর এখনো আলোচ্য নয়—এটি ভবিষ্যতে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।”
নাজ্জালের মতে, গাজায় একটি প্রযুক্তিনির্ভর বেসামরিক প্রশাসন গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে নিরাপত্তা বিষয়টি হামাসের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময় এবং ত্রাণ প্রবেশে সম্মতি দিয়েছি। কিন্তু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে এখনই কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়।”
নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে তিনি পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, “ইসরায়েল কি তার পারমাণবিক অস্ত্র জমা দেবে? কেন শুধু আমাদের বলা হচ্ছে নিরস্ত্রীকরণের কথা? এ প্রশ্নের উত্তর আগে বিশ্বকে দিতে হবে।”
হামাস নেতা আরও জানান, গাজা পুনর্গঠনের জন্য তারা পাঁচ বছরের দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতিতে রাজি, তবে এরপরের পরিস্থিতি নির্ভর করবে ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির ওপর।
অন্যদিকে, ইসরায়েল জানিয়েছে, স্থগিত থাকা রাফা সীমান্ত ক্রসিং আগামী রোববার থেকে পুনরায় খুলে দেওয়া হবে। এর আগে হামাসের দেরিতে মরদেহ হস্তান্তরের কারণে সীমান্ত খোলা স্থগিত করা হয়েছিল।
ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মুস্তাফা গাজার জন্য ৬৭ বিলিয়ন ডলারের পাঁচ বছর মেয়াদি পুনর্গঠন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এ পরিকল্পনায় রয়েছে ১৮টি খাতভিত্তিক ৫৬টি উপ-প্রকল্প।
প্রথম ধাপ: ছয় মাসের জরুরি পুনরুদ্ধার কাজ
দ্বিতীয় ধাপ: তিন বছরের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও আবাসন পুনর্গঠন
তৃতীয় ধাপ: দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ও টেকসই উন্নয়ন
সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনাগুলো নিয়ে প্রশ্ন করলে নাজ্জাল বলেন, “সেগুলো যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে নেওয়া সিদ্ধান্ত। যাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, তারা হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ছিলেন।”
সূত্র: রয়টার্স