আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুদ্ধবিরতির মাঝেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গাজা উপত্যকা। মঙ্গলবার উত্তর গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে এমন সময়, যখন ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে এক শান্তিচুক্তি কার্যকর রয়েছে—যদিও তার বাস্তবতা নিয়ে উঠছে বহু প্রশ্ন।
যুদ্ধবিরতিতে সংঘর্ষ, হামাসের অভিযোগ ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের অবস্থানের কাছে সন্দেহভাজন কয়েকজন আসায় তারা গুলি চালায়। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং হামাস এই হামলাকে যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে। শান্তিচুক্তি: দ্ব্যর্থতায় ঘেরা পরিকল্পনা বিশ্লেষকদের মতে, গাজা নিয়ে তৈরি হওয়া বর্তমান শান্তিচুক্তিটি অস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থপূর্ণ।একদল বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই চুক্তিটি অস্পষ্ট রাখা হয়েছে, যাতে দুই পক্ষকেই কিছুটা ছাড় দিয়ে চুক্তিতে টানা যায়।
অন্যপক্ষের মতে, এই অস্পষ্টতাই ভবিষ্যতে নতুন সংঘাতের বীজ বপন করতে পারে।
বিশেষত, চুক্তিতে বলা হয়েছিল—সব জীবিত বন্দিকে মুক্তি দিলে ইসরাইলি বাহিনী গাজা ছেড়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে ইসরাইল এখনো গাজার অভ্যন্তরের ‘ইয়েলো লাইন’ পর্যন্ত অবস্থান করছে, অর্থাৎ অর্ধেক গাজাই এখনো তাদের দখলে।
শারম আল শেখ সম্মেলন: প্রতীকী, নয় কার্যকর সোমবার মিসরের শারম আল শেখ শহরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে বিশ্লেষকরা বলছেন ‘প্রতীকী প্রদর্শন’। সম্মেলনে ইসরাইল বা হামাস—কোনো পক্ষই অংশ নেয়নি। ট্রাম্প ঘোষণা করেন, গাজা সংকট সমাধানে তার ২০ দফা পরিকল্পনার বাকি অংশ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে তা কোথায় বা কবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্মেলনে বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি। ❓ মূল প্রশ্ন তিনটি: যার জবাব এখনো মেলেনি বিশ্লেষকদের ভাষায়, গাজা সংকট সমাধানের পথে প্রধান বাধা রয়ে গেছে তিনটি জটিল প্রশ্ন: হামাসের ভবিষ্যৎ কী হবে? ইসরাইলি সেনা কবে ও কীভাবে গাজা ছাড়বে? যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা কে শাসন করবে?
এই প্রশ্নগুলোর কোনো নির্দিষ্ট উত্তর এখনো আসেনি। অথচ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ট্রাম্প একটিও শব্দ বলেননি—যা শান্তি প্রক্রিয়ার প্রতি নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। গাজার ভৌগোলিক প্রেক্ষাপট দৈর্ঘ্য: ৪১ কিমি,প্রস্থ: ১০ কিমি বেশিরভাগ উপকূলবর্তী অঞ্চল এখনো ইসরাইলি সেনার দখলে রয়েছে।
উপসংহার: অস্থির ভবিষ্যতের পথে গাজা শান্তিচুক্তি কার্যকর হলেও গাজা এখনো উত্তপ্ত। একদিকে যুদ্ধবিরতি চলছে, অন্যদিকে প্রাণহানি ঘটছে। চুক্তির অস্পষ্টতা, মিসরের সম্মেলনের অকার্যকারিতা এবং মূল প্রশ্নগুলোর অনুত্তরিত থাকা—সব মিলিয়ে গাজার ভবিষ্যৎ এখনো অন্ধকারে ঢাকা।