নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেষ পর্যায়ে নির্মাণকাজ, উদ্ভাসিত হচ্ছে ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি যশোর শহরের ঐতিহাসিক বকুলতলায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিসৌধ’ অবশেষে দৃশ্যমান হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) লোহার পাত দিয়ে তৈরি সৌধের মূল কাঠামো স্থাপন করা হয়, যা ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে নির্মিত হচ্ছে। গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, দু’একদিনের মধ্যেই সৌধটির পুরো কাজ শেষ হবে।
শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে সৌধে রঙ করার এবং বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ। এর মধ্য দিয়ে যশোরবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটছে।
সৌধের বৈশিষ্ট্য ও নির্মাণ ব্যয় যশোর গণপূর্ত অধিদফতরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান:
সৌধটির উচ্চতা ১৮ ফুট এবং ব্যাস ৬ ফুট। এটি মোটা লোহার শিট দিয়ে তৈরি। পুরো প্রকল্পে বরাদ্দ হয়েছে ১৪ লাখ টাকা। সৌধের গায়ে সিএনসি কাটিং প্রযুক্তিতে খোদাই করা হয়েছে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের সময়কার স্লোগান, যা জনগণের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি আরও বলেন,
“এই স্লোগানগুলো শুধু ইতিহাস নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অন্তর্নিহিত বার্তা— প্রতিবাদ আর প্রতিরোধের ভাষা কখনো মুছে যায় না।”
পটভূমি:
স্মৃতিসৌধের পেছনের ইতিহাস ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের সময়, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙার ঘটনা ঘটে।
বিশেষ করে ৫ আগস্ট, ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরে যশোরের বকুলতলায় অবস্থিত শেখ মুজিবের বিশাল ম্যুরাল জনতার রোষে পড়ে। কিছুদিন পর, বুলডোজার দিয়ে পুরো ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া হয় এবং ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলা হয়।
এই ঐতিহাসিক স্থানেই শহিদদের স্মরণে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিসৌধ’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৪ জুলাই সকালে জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে সৌধ নির্মাণের উদ্বোধন করেন।
যানজট নিরসনে ভৌগোলিক পরিবর্তন যশোর পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, স্মৃতিসৌধের পাশে থাকা প্রাচীর ভেঙে মূল রাস্তার সঙ্গে যুক্ত করা হবে, যা এলাকায় যানজট নিরসনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার বিএম কামাল হোসেন বলেন,
“স্মৃতিসৌধের পাশের জায়গাটি ইতোমধ্যে ইটের খোয়া দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানো হলে সড়কের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ দেওয়া হবে।”
এই সৌধ শুধু একটি স্থাপত্য নয়— এটি একটি প্রতীক, যেখানে জেগে উঠবে যশোরবাসীর সংগ্রামী স্মৃতি, ইতিহাস, আর প্রজন্মান্তরের অনুপ্রেরণা।