আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুদ্ধবিরতির শীতল নিঃশ্বাস বইছে গাজায়। কিন্তু সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে কান্নার শব্দ ছড়িয়ে পড়ছে শহরজুড়ে।
ইসরায়েলের টানা বোমাবর্ষণ থামার পর গাজার ধ্বংসস্তূপে শুরু হয়েছে মর্মান্তিক এক অভিযান—লাশ উদ্ধারের অভিযান।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) থেকে গাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। আর তার পরপরই উদ্ধারকারীরা ছুটে যান ভেঙে পড়া ভবনগুলোর দিকে, যেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ছিল বহু মরদেহ।দিনশেষে ১৫৫ লাশ, ১৩৫ ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, শুক্রবারই গাজার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে পৌঁছেছে ১৫৫টি লাশ। এর মধ্যে শুধু ধ্বংসস্তূপ থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে ১৩৫টি মরদেহ।
বিভিন্ন হাসপাতালের হিসাব অনুযায়ী লাশগুলো পাঠানো হয়েছে এভাবে:
৪৩টি – আল-শিফা হাসপাতাল, গাজা সিটি
৬০টি – আল-আহলি আরব হাসপাতাল
৪টি – আল-আওদা হাসপাতাল, নুসেইরাত
১৬টি – আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল, দেইর-এল-বালা
৩২টি – নাসের হাসপাতাল, খান ইউনিস
এক পরিবারের ১৬ জন একসঙ্গে নিহত
নৃশংসতার নতুন উদাহরণ মিলেছে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ঘাবুন পরিবারের ওপর চালানো হামলায়। শুক্রবার ভোরে চালানো এ হামলায় একই পরিবারের ১৬ জন প্রাণ হারান।
এ ছাড়া গাজার রাদওয়ান এলাকায় একজন এবং খান ইউনিসে আরও দুজন নিহত হয়েছেন।
আরও প্রাণ হারিয়েছে গতকালের হামলায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগে শেষ দফার হামলায় আরও ২০ জন নিহত হন, যার মধ্যে একজন গুরুতর আহত অবস্থায় মারা যান। উদ্ধারকারীরা বলছেন, অনেক জায়গায় এখনো ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে আছে বহু মরদেহ। সময় যত গড়াচ্ছে, সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
জিম্মি বিনিময়ের অপেক্ষা জানা গেছে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাস কিছু জীবিত এবং মৃত জিম্মির মরদেহ ফেরত দেবে—এমন সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন মধ্যস্থতাকারীরা। এই যুদ্ধবিরতি মূলত মানবিক ভিত্তিতে জিম্মি বিনিময়ের লক্ষ্যেই কার্যকর হয়েছে।
এক ঝলক স্বস্তি, দীর্ঘশ্বাসে ঢাকা বাস্তবতা যুদ্ধবিরতি যেন ক্ষণিকের স্বস্তি। তবে এই স্বস্তির মাঝেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এক ভয়াবহ সত্য—পৃথিবীর চোখের আড়ালে ধীরে ধীরে মাটি গিলে নিয়েছে শত শত প্রাণ।
বোমার শব্দ থেমেছে, কিন্তু কান্নার ধ্বনি যেন এখন আরও স্পষ্ট।