October 27, 2025, 7:27 pm
Headline :

দেওবন্দ সফরে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকিকে ‘কাসেমী’ উপাধি, দেওয়া হলো বিশেষ সনদ

অনলাইন ডেস্ক :

আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারতের ঐতিহাসিক ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং হাদিস পাঠে অংশগ্রহণের পর তাকে ‘কাসেমী’ উপাধি দিয়ে বিশেষ সনদ প্রদান করা হয়।

প্রথম তালেবান মন্ত্রী হিসেবে দেওবন্দে সফর শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে মুত্তাকি সড়কপথে উত্তর প্রদেশের দেওবন্দে পৌঁছান এবং সেখানে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবস্থান করেন। তালেবান পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম কোনো শীর্ষ নেতা দারুল উলুম দেওবন্দ সফর করলেন, যা কূটনৈতিক এবং আদর্শিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

উষ্ণ অভ্যর্থনা, সম্মানসূচক সনদ দেওবন্দে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মুফতি আবুল কাসেম নোমানী এবং ১৫ জন জ্যেষ্ঠ আলেমের একটি প্রতিনিধি দল। ছাত্র ও শিক্ষকরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরবর্তীতে মুত্তাকি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে একটি ঐতিহ্যবাহী হাদিস পাঠ সেশনে অংশ নেন এবং হাদিস শিক্ষার সনদ অর্জন করেন। এ উপলক্ষে তাকে ‘কাসেমী’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়, যার ফলে এখন থেকে তার নামের সঙ্গে “মাওলানা আমির খান মুত্তাকি কাসেমী” যুক্ত হবে। এই সনদ তাকে কেবল দেওবন্দি চিন্তাধারার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, বরং দক্ষিণ এশিয়ার ইসলামি ঐতিহ্যের সঙ্গেও তাকে সাংস্কৃতিকভাবে যুক্ত করে।

“ঘরে ফেরা”— মন্তব্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতির জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা আরশাদ মাদানী এ সফরকে ‘এক ধরনের ঘরে ফেরা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন,

“মুত্তাকি যেন তার পুরনো শিক্ষালয়ে ফিরে এসেছেন।” বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেওবন্দের শীর্ষ আলেমরা।

মুত্তাকির মন্তব্য: “ভারত-আফগান সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে” মুত্তাকি বলেন,

“এই হৃদয়স্পর্শী অভ্যর্থনার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি আশা করি, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। আমরা নতুন কূটনীতিক পাঠাব, এবং কাবুলে ভারতীয় দূতাবাস পুনরায় সক্রিয় দেখতে চাই। দিল্লিতে আমাকে যেভাবে গ্রহণ করা হয়েছে, তা ভবিষ্যতে আরও এমন সফরের পথ প্রশস্ত করবে।”
দেওবন্দের প্রতীকি গুরুত্ব তালেবানের কাছে দারুল উলুম দেওবন্দ কেবল একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়—তালেবানের আদর্শিক গঠনেও এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার দারুল উলুম হাক্কানিয়া, যা দেওবন্দের আদলে প্রতিষ্ঠিত, সেখান থেকেই তালেবানের অনেক শীর্ষ নেতা শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।

ভারত সফরের পরবর্তী সূচি ও পটভূমি রবিবার: মুত্তাকি যাবেন আগ্রা, পরিদর্শন করবেন ঐতিহাসিক তাজমহল।
সোমবার: নয়াদিল্লিতে ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্মেলনে অংশ নেবেন।
উল্লেখযোগ্য যে, তালেবান মন্ত্রী মুত্তাকির ভারত সফর কয়েক সপ্তাহ আগেই নির্ধারিত ছিল। তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার অনুমতি না মেলায় তা স্থগিত হয়। সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের ছাড়পত্র পাওয়ার পর সফরটি সম্পন্ন হচ্ছে। এ সফর ভারতের সঙ্গে তালেবান সরকারের আংশিক আনুষ্ঠানিক ও গোপন যোগাযোগের ধারাবাহিকতার অংশ। এ বছরের শুরুর দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি কাবুলে গিয়ে মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page