October 27, 2025, 5:22 pm
Headline :

নদীতে ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ‘চন্দন কাঠ’ নামে

নদীতে ভেসে আসা গাছের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ‘চন্দন কাঠ’ নামে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

উজানের ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে কয়েকদিন ধরে কুড়িগ্রামের নদনদীতে ভেসে আসছে হাজারো গাছের গুঁড়ি। এর মধ্যেই লালচে রঙের কিছু কাঠ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ‘লাল চন্দন’ নামে।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার ভোর থেকে কালজানি ও দুধকুমার নদীতে এসব কাঠ ভেসে আসতে শুরু করে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই নৌকা, বাঁশের ভেলা ও সাঁতার কেটে গাছ তোলার প্রতিযোগিতায় নামে এলাকাবাসী। একেকটি গাছের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়; কোথাও কোথাও দাম লাখ ছাড়িয়েছে।

রায়গঞ্জ ইউনিয়নের দামাল গ্রামের আব্দুল মোতালেব বলেন, “চারজন মিলে ৫০ ফুটের মতো একটা লাল কাঠ তুলেছি। দেখতে একদম চন্দনের মতো—দাম চেয়েছি দেড় লাখ টাকা।” অনেকে আবার কাঠগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। স্থানীয় আজাদ হোসেন জানান, “একেকটা গুঁড়ি ১২ হাজার টাকায় কিনেছি, কেটে বিক্রি করব জ্বালানি কাঠ হিসেবে।”

বন বিভাগ বলছে, এসব কাঠ আসলে সাধারণ কাঠ—দীর্ঘদিন পানিতে থাকার কারণে রঙ পরিবর্তিত হয়ে লালচে হয়েছে। কুড়িগ্রাম বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমান বলেন, “শ্বেত বা রক্ত চন্দনের কোনো উপাদান এসব কাঠে পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগই পচা কাঠ।”

বন কর্মকর্তাদের ধারণা, ভুটান হয়ে ভারতের কোচবিহার জেলার হাসিমারা বনাঞ্চল থেকে নদীর স্রোতে ভেসে এসেছে কাঠগুলো।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ মির্জা নাসির উদ্দিন বলেন, “পানিতে দীর্ঘসময় ভেজা কাঠে রাসায়নিক পরিবর্তনের কারণে লালচে রঙ দেখা দেয়। কিন্তু তাতে চন্দনের কোনো গুণ বা গন্ধ থাকে না।”

এদিকে কাঠ তোলার সময় নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন নাগেশ্বরীর মনছুর আলী নামে এক ব্যক্তি। ফায়ার সার্ভিস জানায়, তীব্র স্রোতের কারণে বহু চেষ্টা সত্ত্বেও তার মরদেহ উদ্ধার সম্ভব হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page