October 27, 2025, 11:49 pm
Headline :

জাতিসংঘ–সমর্থিত প্রতিবেদন: রোহিঙ্গা গ্রাম গুঁড়িয়ে ঘাঁটি বানিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

জাতিসংঘ–সমর্থিত প্রতিবেদন: রোহিঙ্গা গ্রাম গুঁড়িয়ে ঘাঁটি বানিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০১৭ সালে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়নের পর তাদের গ্রাম, মসজিদ ও কবরস্থান ধ্বংস করে সেসব জায়গায় সেনা ঘাঁটি গড়ে তুলেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। জাতিসংঘ–সমর্থিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জমি দখল করে সেখানে নতুন সড়ক, স্থায়ী ভবন, সুরক্ষিত কম্পাউন্ড ও হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হয়েছে।

দমন অভিযানের প্রেক্ষাপট

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে পুলিশের অন্তত ৩০টি তল্লাশি চৌকিতে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১২ জন সদস্য নিহত হন। এর পরই সেনাবাহিনী দমন অভিযান চালায়। সে সময় লাখো রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। বর্তমানে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার ও ভাসানচরের শরণার্থীশিবিরে বসবাস করছে। জাতিসংঘ এই অভিযানকে “জাতিগত নিধনের আদর্শ উদাহরণ” হিসেবে অভিহিত করেছে।

তদন্তে যা পাওয়া গেছে

২০১৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের গঠিত ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম) প্রতিবেদনে জানায়, সেনারা পরিকল্পিতভাবে গ্রাম, কৃষিজমি ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস করেছে। সরকারি নথি বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছে, কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের জমির মালিকানা সম্পর্কে অবগত থেকেও এসব এলাকা দখল করেছে।

প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা, স্যাটেলাইট ছবি, ভিডিও ফুটেজ ও সরকারি নথির তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ইন দিন গ্রামে বসতি ধ্বংস করে সামরিক ঘাঁটি ও দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

মিয়ানমারের প্রতিক্রিয়া

সেনাবাহিনী এর আগে দাবি করেছিল, ২০১৭ সালের অভিযানে তারা গণহত্যা চালায়নি। তবে স্বীকার করেছে, কিছু সদস্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে অপরাধ করে থাকতে পারে। নতুন প্রতিবেদনের বিষয়ে সেনা মুখপাত্র রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেননি।

বর্তমান পরিস্থিতি

২০২১ সালে অং সান সু চির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গৃহযুদ্ধ চলছে। রাখাইন রাজ্যে সংঘাত আবারও তীব্র হওয়ায় রোহিঙ্গারা নতুন করে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন। প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে, চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে কিছু রোহিঙ্গা অস্ত্র হাতে তুলে নিতে শুরু করেছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page