আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা থামছেই না। দখলদার বাহিনী যে এলাকাগুলোকে ‘মানবিক নিরাপদ অঞ্চল’ বলে দাবি করছে, সেখানেই বারবার আঘাত হানছে তারা। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) একদিনেই কমপক্ষে ৯১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ১১ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় অন্তত ১৩৩ দফা হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৯০৩ জন বেসামরিক নাগরিক, যা গাজায় মোট প্রাণহানির প্রায় অর্ধেক। সংস্থাটির অভিযোগ, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করছে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এবং সতর্ক করেছে, বিশ্ব নীরব থাকলে এই হত্যাযজ্ঞ আরও বাড়বে।
হাসপাতালে হামলা, চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে
নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণের কারণে গাজার বেশ কিছু হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে গেছে। জর্ডান ফিল্ড হাসপাতাল থেকে ইতোমধ্যেই সব চিকিৎসক, কর্মী ও ১০৭ রোগীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংকটে থাকা হাসপাতালগুলোতে নেই মৌলিক ওষুধপত্র, যেমন অ্যানাস্থেসিয়া ও অ্যান্টিবায়োটিক। চিকিৎসকেরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় সীমাহীন কষ্টে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
আল-আকসা হাসপাতালের চিকিৎসক খলিল দিগরান অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে শিশুদের একমাত্র বিশেষায়িত রান্তিসি হাসপাতালকে টার্গেট করেছে। তার আশঙ্কা, হামলা চলতে থাকলে দক্ষিণাঞ্চলের হাসপাতালগুলোও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।
যুদ্ধবিরতির দাবি ও কূটনৈতিক তৎপরতা
গাজার রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতির প্রতিবাদে শনিবার জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চেয়েছেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে শিগগিরই সমঝোতা হতে পারে। তবে হামাস জানিয়েছে, তাদের কাছে এখনো কোনো প্রস্তাব পৌঁছেনি। হামাসের এক কর্মকর্তা আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে কিছুই আসেনি।’
আগামী সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।