আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞের মধ্যে মার্কিন জনমত নিজেদের অনুকূলে রাখতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কৌশলগত ‘অস্ত্র’ হিসেবে দেখছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নিউইয়র্কে ইসরাইলি কনস্যুলেট জেনারেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি প্রকাশ্যে টিকটক ও এক্স (সাবেক টুইটার)–এর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ইচ্ছা জানান।
নেতানিয়াহুর বক্তব্য, “আমাদের জন্য (সোশ্যাল মিডিয়া) যুক্তরাষ্ট্রে ঘাঁটি রক্ষার সবচেয়ে বড় অস্ত্র।” তিনি স্পষ্ট করেন, টিকটক কেনাবেচার চলমান প্রক্রিয়ার দিকে ইসরাইল গভীর নজর রাখছে। তার দাবি, এ প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণে গেলে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব তৈরি হবে। পাশাপাশি এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ককেও ‘বন্ধু’ আখ্যায় দিয়ে নেতানিয়াহু জানান, এ প্ল্যাটফর্মের ওপরও প্রভাব বিস্তার করতে চান তারা।
অন্যদিকে, টিকটক বিক্রির বিষয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। এতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম বিক্রি না হলে প্ল্যাটফর্মটি নিষিদ্ধ করা হবে। আপাতত বিক্রির সময়সীমা পিছিয়ে দিয়ে ক্রেতা খোঁজার চেষ্টা চলছে। টিকটকের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার।
টিকটকের সম্ভাব্য ক্রেতাদের মধ্যে ডেল টেকনোলজিসের প্রধান নির্বাহী রুপার্ট মারডকসহ আরও কয়েকজন বিনিয়োগকারীর নাম আলোচনায় এসেছে। এছাড়া আবুধাবির রাজপরিবারও মার্কিন বাজারে টিকটকের অংশীদার হতে পারে বলে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মতি দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রকে চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত ও বৈষম্যহীন ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ব্যবহারকারী সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও প্ল্যাটফর্মটির সক্রিয় ব্যবহারকারী; তার অনুসারী সংখ্যা দেড় কোটির বেশি। ফলে টিকটকের নিয়ন্ত্রণ ঘিরে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও তীব্র হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান