আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্কে আসা ইরানি প্রতিনিধিদলের ওপর কড়া বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, তাদের চলাচল সীমিত করা হয়েছে এবং পাইকারি দোকান বা বিলাসবহুল পণ্য কেনাকাটাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উপমুখপাত্র টমি পিগট জানান, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য ইরানের ধর্মীয় নেতৃত্বের ওপর “সর্বোচ্চ চাপ” সৃষ্টি করা। তার অভিযোগ, “যখন সাধারণ ইরানিরা দারিদ্র্য, অবকাঠামোর ভাঙন, পানি ও বিদ্যুতের সংকটে ভুগছে, তখন ইরানি কর্তৃপক্ষ বিদেশে বিলাসিতা উপভোগ করছে।”
২০১৭ সাল থেকে ইরানে অর্থনৈতিক সংকট ও দুর্নীতির প্রতিবাদে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের বিক্ষোভ নিয়মিত হচ্ছে। তেহরান আশঙ্কা করছে, সংকট দীর্ঘস্থায়ী হলে শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তবে প্রকাশ্যে তারা আপসহীন অবস্থান দেখালেও, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনায় আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় দেশ ও ইসরায়েল বহুদিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ করে আসছে। যদিও ইরান এসব অভিযোগ সব সময় অস্বীকার করেছে। চলতি বছরের জুনে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।
পিগট জানান, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর নির্দেশে এখন ইরানি প্রতিনিধিরা শুধুমাত্র হোটেল থেকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে যাওয়ার নির্ধারিত রুটেই চলাচল করতে পারবেন। এর বাইরে যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আগে তারা ইরানি মিশন, রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ও জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দরে যাতায়াতের অনুমতি পেতেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
পিগট বলেন, “আমেরিকানদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা ইরানি শাসকগোষ্ঠীকে জাতিসংঘের মঞ্চ ব্যবহার করে সন্ত্রাসী এজেন্ডা চালাতে বা জনগণের অর্থে বিলাসিতা ভোগ করতে দেব না।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই পদক্ষেপ স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে—যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জনগণের পাশে রয়েছে এবং উন্নত ভবিষ্যৎ ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।”