আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আজ রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার। এটিকে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতির এক বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত জুলাই মাসেই স্টারমার বলেছিলেন, যদি ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে অঙ্গীকার না করে, তবে যুক্তরাজ্য তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে। অবশেষে সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটছে।
ব্রিটিশ মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, গাজায় অনাহার ও সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র এবং পশ্চিম তীরে অব্যাহত বসতি সম্প্রসারণই এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ। আইনমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, “পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ ও সহিংসতা কার্যকর দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে ধ্বংস করছে। তাই এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি।”
ইসরায়েলি সরকার এ পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু একে ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার সমান’ বলে অভিহিত করেছেন। একইভাবে জিম্মিদের পরিবার ও কিছু কনজারভেটিভ নেতা ব্রিটেনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।
এর আগে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের পরিবার একটি খোলা চিঠিতে অনুরোধ জানিয়েছিল—সব জিম্মি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে। তাদের দাবি, এই ঘোষণায় হামাস উৎসাহিত হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি আলোচনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তবে লেবার সরকারের দাবি, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির আশা বাঁচিয়ে রাখার নৈতিক দায়িত্ব থেকেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, খুব শিগগিরই হামাসের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি লন্ডনে স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন শাসনে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।
এখন পর্যন্ত জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় ৭৫ শতাংশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। গত বছরই স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে এই পদক্ষেপ নেয়। সম্প্রতি পর্তুগাল, ফ্রান্স, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।