অনলাইন ডেস্ক
চট্টগ্রামের হাটহাজারী সদরে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুন্নিপন্থী এলাকাবাসীর সংঘর্ষে দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। শনিবার রাত ৮টার দিকে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষে পুরো এলাকা অস্থির হয়ে ওঠে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে জশনে জুলুসের গাড়ি হাটহাজারী দিয়ে যাওয়ার সময় কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনার জেরে জুলুস থেকে ফেরা লোকজন পাশের এলাকায় আশ্রয় নিলে, সেখানেও তাদের ওপর হামলা হয়। পরে এলাকাবাসী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষ চলাকালে হাটহাজারী বাস স্টেশনে অন্তত পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করে কওমী ছাত্ররা। এতে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।
হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ বারবার শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানমুখী হওয়ার আহ্বান জানালেও উত্তেজিত ছাত্ররা তা উপেক্ষা করে মিছিল অব্যাহত রাখে।
হাটহাজারী সার্কেলের পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ জানান, “উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হলেও উত্তেজনার কারণে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে অনেক আহত হয়েছেন।”
এদিকে, সংঘর্ষের পেছনে থাকা উত্তেজনার সূত্র পাওয়া গেছে ফেসবুক থেকে। জানা যায়, শনিবার সকালে হাটহাজারী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা মসজিদের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত যুবক আরিয়ান ইব্রাহিম (২০) কে ফটিকছড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ। তার বাড়ি ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে। ফটিকছড়ি থানার ওসি নুর আহমদ জানান, অভিযুক্তের উস্কানিমূলক ফেসবুক আইডি ইতোমধ্যে ডিঅ্যাকটিভ করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “ঘটনার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত আটক রয়েছে এবং অপরাধীকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
দিনের শুরুতে ফেসবুকে দেওয়া আরিয়ান ইব্রাহিমের পোস্ট থেকেই যে উত্তেজনার সূত্রপাত—রাতে সেই জেরেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ।