আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার ও তীব্র বোমাবর্ষণে আরও অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল গাজা সিটিতেই প্রাণ গেছে ৪৩ জনের। ভয়াবহ এই হামলায় একেকটি পরিবারকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন।
হামাস এই পরিস্থিতিকে সরাসরি “গণহত্যা” আখ্যা দিয়েছে। তারা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জরুরি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবারের বোমাবর্ষণ ছিল গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ।
বাস্তুচ্যুত সাবরিন আল-মাবহুহ আল জাজিরাকে বলেন,
“আমার ভাইকে তার ঘরেই মেরে ফেলেছে। তার স্ত্রী-সন্তানসহ সবাইকে মুছে দিয়েছে। কেউ বেঁচে নেই।”
শেখ রাদওয়ান এলাকায় স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের তাঁবুতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দা জাকিয়া সামি বলেন,
“শেখ রাদওয়ান জ্বলছে। যদি গাজা সিটির দখল থামানো না যায়, আমরা সবাই মরে যাব। যারা চুপচাপ দেখছে, কিছু করছে না— তাদের আমরা ক্ষমা করব না।”
গাজার গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন সপ্তাহে গাজা সিটিতে ইসরায়েল অন্তত ১০০ রোবট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো আবাসিক ব্লক গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ১৩ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত শুধু গাজা সিটিতেই প্রায় ১ হাজার ১০০ জন নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন,
“এ যেন এক প্রলয়… মহল্লার পর মহল্লা মুছে যাচ্ছে। মানুষ কয়েক দশকে যা গড়ে তুলেছিল, মুহূর্তেই হারিয়ে যাচ্ছে।”
হামাস জানিয়েছে, তারা সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছে। এর আওতায় ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে তারা প্রস্তুত। তবে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় এ প্রস্তাব কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক সংস্থা আইপিসি গত আগস্টেই সতর্ক করেছে যে, উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে এবং দ্রুত দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে। সহায়তাকর্মীদের মতে, সর্বাত্মক অবরোধে গাজার মানুষের জন্য প্রতিটি দিনই বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পরিণত হচ্ছে।