আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের সংগঠন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স (আইএজিএস)। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
সংস্থার তিন পাতার প্রস্তাবে ইসরায়েলের ২২ মাসের যুদ্ধকালীন পদক্ষেপকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েল সুপরিকল্পিতভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ত্রাণ খাতকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, হামলায় অন্তত ৫০ হাজার শিশু নিহত বা আহত হয়েছে, যা গাজার মানুষের টিকে থাকা ও পুনর্গঠনের সক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, গাজায় সব ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা এবং বাড়িঘর ধ্বংসের বিষয়েও ইসরায়েলি নেতারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। এছাড়া তাদের প্রকাশ্য উক্তি—যেখানে ফিলিস্তিনিদের ‘শত্রু’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং গাজাকে “চাপা দেওয়া” বা “নরকে পরিণত” করার হুমকি দেওয়া হয়েছে—ও তোলা হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রতিবেদনকে “হামাসের মিথ্যা” ও দুর্বল গবেষণা হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত ও আটক হওয়া মানুষদের ঘটনা অপরাধ হলেও, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা কেবল হামাসকে নয়, গাজার পুরো জনগোষ্ঠীকেই টার্গেট করেছে।
আইএজিএস বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণহত্যা বিশেষজ্ঞদের পেশাজীবী সংগঠন। এতে হলোকাস্ট বিশেষজ্ঞসহ প্রায় ৫০০ সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৮ শতাংশ ভোটে অংশ নেন এবং ভোটদানের ৮৬ শতাংশই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে।
১৯৪৮ সালে হলোকাস্ট পরবর্তী সময়ে গৃহীত জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী, কোনো জাতীয়, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত অপরাধই গণহত্যা হিসেবে গণ্য হবে।