আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পরীক্ষায় ফেল করার পর পরিবারের বকাঝকা সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ছাড়ে এক বাংলাদেশি কিশোরী। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়ে সে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়। মাত্র তিন মাসে প্রায় ২০০ জন তাকে পালাক্রমে ধ’র্ষ’ণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ ও মানবাধিকার সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, কিশোরীর বয়স প্রায় ১৫ বছর। চলতি বছরের শুরুর দিকে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর পরিবারের কড়া বকুনি খেয়ে সে বাড়ি থেকে পালিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। পথে এক দালাল তাকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় নিয়ে যায়।
প্রথমে কলকাতার একটি বাসায় তাকে আটকে রেখে একাধিক ব্যক্তি শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেয়। কিশোরী অভিযোগ করেছে, তিন মাসে অন্তত ২০০ জন ব্যক্তি তাকে ধ’র্ষ’ণ করেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মুম্বাইসংলগ্ন ভাসাইয়ের নৈগাঁও এলাকায় মানব পাচার চক্রের দেহব্যবসার আস্তানায় তিন মাসে ২০০ জনেরও বেশি পুরুষের যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১২ বছরের এক বাংলাদেশি শিশু।
ভারতীয় পুলিশ ইতোমধ্যে মানবপাচার ও গণধ’র্ষ’ণের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে একটি নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে এবং বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে যাতে তাকে দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
এ ঘটনায় দুই দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং সীমান্তে পাচার প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি ও যৌথ অভিযান জোরদারের দাবি তুলেছে।
অভিযানে সহায়তা করে এনজিও এক্সোডাস রোড ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ও হারমনি ফাউন্ডেশন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হারমনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান আব্রাহাম মাথাই জানান, রিমান্ড হোমে শিশুটি জানায়, প্রথমে তাকে গুজরাটের নাদিয়াদে নেওয়া হয়। সেখানে তিন মাসে ২০০ জনেরও বেশি পুরুষ তাকে যৌন নির্যাতন করে।
মাথাই বলেন, ‘মেয়েটি এখনো কৈশোরে পৌঁছায়নি, অথচ দেহ ব্যবসার নরপিশাচদের হাতে তার শৈশব নির্মমভাবে হারিয়ে গেছে।’ তিনি আরও জানান, স্কুলে একটি বিষয়ে ফেল করায় মা-বাবার কড়া শাসনের ভয়ে শিশুটি বাড়ি থেকে পালায়।
এ সময় পরিচিত এক নারী তাকে ভারতে নিয়ে গিয়ে দেহ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করেন। মাথাই মেয়েটিকে নির্যাতনকারী ২০০ জনকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
পুলিশ কমিশনার নিকেত কৌশিক বলেন, পুরো চক্র ধ্বংস করতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ কিশোরীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে।