অনলাইন ডেস্ক,
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে গত জুলাইয়ে আন্দোলন চলছিল। ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সাংবাদিকের কথা শেষ না করেই বলেছিলেন, “যুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কেন এত ক্ষোভ? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা মেধাবী না? কিন্তু রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি-পুতিরা মেধাবী।” এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ শুরু হয় ।
সেদিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছিলেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ঘটনার এক বছরেরও বেশি সময় পর আজ সোমবার (১১ আগস্ট) তাদের মোবাইল কথোপকথনের এই অডিও রেকর্ড প্রকাশ্যে এসেছে। গত বছরের ১৪ জুলাই রাতে ট্রাইব্যুনালে এই ফোনালাপ আজ জমা দিয়েছে প্রসিকিউশন। তার আগে তদন্ত সংস্থা এই অডিও রেকর্ড জব্দের পর ফরেনসিক করে সত্যতা পেয়েছে।
এসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাবির সাবেক ভিসি মাকসুদ কামালকে বলেন, ‘রাজাকারের কী অবস্থা হয়েছে দেখিস নাই, সবগুলোকে ফাঁসি দিছি এবার তোদেরও ছাড়বো না।’
সেই অডিওতে মাকসুদ কামালকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ইংল্যান্ডে ছাত্ররাজনীতির জন্য কয়েকজনকে গুলি করে মেরে ফেলেছিল১, ঐ রকম অ্যাকশন নেয়া ছাড়া আরও কোন উপায় নাই।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে?
এই মন্তব্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তখন ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার, রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এরপরই দেশজুড়ে শুরু হয় এক নতুন মাত্রার ছাত্র আন্দোলন। মাত্র তিন সপ্তাহ পর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে।