November 5, 2025, 11:14 am
Headline :
৯১ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে জোনায়েদ সাকির দল গণসংহতি আন্দোলন তদন্ত প্রতিবেদনে জানা গেল মাইলস্টোন দুর্ঘটনার কারণ বিশ্বকাপ জিতে ট্রফি হাতে নিয়েই বিয়ে করতে চান রোনালদো সাংবাদিকদের কারণে পার্শ্ববর্তী দেশের গুজব অনেকটা কমেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অক্ষয় কুমারের আবেগঘন পোস্ট: ‘আমাদের রানী ক্যাটরিনাকে কখনো ভুলবো না’ অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা সিলেটের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন গায়ক তাসরিফ খান বাংলাদেশিদের উচ্ছ্বাসে কুইন্স: জোহরান মামদানি নির্বাচিত নিউইয়র্কের মেয়র মোহাম্মদপুরে বহুতল ভবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে, হতাহতের খবর নেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫’ খসড়া প্রকাশ, মতামত আহ্বান

অনিয়মে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা পেল ইসি

অনিয়মে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা পেল ইসি
অনিয়মে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা পেল ইসি

জেডটিভি বাংলা ডেস্ক :
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হলেও নিজ দলের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে—এমন বাধ্যবাধকতা রেখে সরকার ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর গেজেট প্রকাশ করেছে। সোমবার রাতে আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ গেজেট জারি হয়।

২০ ধারা সংশোধনে জোট রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা
আরপিওর ২০ ধারা সংশোধনের মাধ্যমে বলা হয়েছে—জোটগত নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রতিটি নিবন্ধিত দলকে নিজস্ব প্রতীকে ভোট করতে হবে। বিএনপি ও তাদের মিত্র দলগুলো এই বিধানের তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। তারা নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে আগের নিয়ম—অর্থাৎ জোটের অন্য দলের প্রতীকে লড়ার সুযোগ—বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ কয়েকটি দল এই পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছে।

সরকারে মতভেদ, তবু সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত
বিষয়টি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি বৈঠকে’ তর্ক-বিতর্ক হয়। কয়েকজন উপদেষ্টা সংশোধনী পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব দেন, তবে সরকারের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকে। প্রধান উপদেষ্টা আইন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন বিধানে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কারণ ছোট দলগুলো সাধারণত বিএনপির প্রতীকে (ধানের শীষ) নির্বাচনে অংশ নিলে জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে। এখন নিজ নিজ প্রতীকে লড়তে হলে ছোট দলগুলোর জন্য নির্বাচনি সমীকরণ কঠিন হয়ে পড়বে।

সংশোধিত আরপিওতে নতুন যেসব বিধান যুক্ত হয়েছে
ভোট ও অনিয়ম সংক্রান্ত কোনো আসনে অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোটগ্রহণ বন্ধ ও ফলাফল বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন। ‘না’ ভোটের বিধান পুনর্বহাল: একজন প্রার্থী থাকলে ভোটাররা ‘না’ ভোট দিতে পারবেন; ‘না’ ভোট বেশি হলে পুনরায় নির্বাচন হবে। ইভিএম ব্যবহারের বিধান বাতিল করা হয়েছে।

নির্বাচনি শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী যুক্ত হয়েছে; এখন তারা নির্বাচনি দায়িত্বে থাকতে পারবেন। সমান ভোট পেলে লটারির পরিবর্তে পুনঃভোট হবে।

প্রার্থী ও দলের অর্থনৈতিক বিধান
প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ভোটারপ্রতি ব্যয়সীমা ১০ টাকা নির্ধারণ। রাজনৈতিক দলকে ৫০ হাজার টাকার বেশি অনুদান বা চাঁদা দিতে হলে তা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দিতে হবে এবং দাতার ট্যাক্স রিটার্ন থাকতে হবে। দলীয় অনুদান ও ব্যয়ের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ বাধ্যতামূলক।

ভোটার ও কর্মকর্তাদের সুযোগ
প্রবাসী ভোটার ও নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। সাংবাদিকরা ভোট গণনার স্থানে উপস্থিত থাকতে পারবেন।

আইনগত বিধান ও শাস্তি
পলাতক আসামিরা প্রার্থী হতে পারবেন না। আচরণবিধি লঙ্ঘনে দেড় লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের দণ্ডের বিধান। দলের নিবন্ধন স্থগিত হলে প্রতীকও স্থগিত থাকবে। হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে ভোটের পরও ইসি ব্যবস্থা নিতে পারবে। মিথ্যা তথ্য, গুজব বা এআই অপব্যবহারের জন্য শাস্তির বিধান যোগ হয়েছে।

উপসংহার
আরপিওর এই বড় ধরনের সংশোধনীতে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সরকার বলছে, এটি নির্বাচনি স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করবে; কিন্তু বিরোধী দলগুলোর মতে, জোট রাজনীতির সংস্কৃতিতে এটি আঘাত হানবে এবং ছোট দলগুলোকে কোণঠাসা করবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page