নিজস্ব প্রতিবেদক,
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে দুই মামলায় সাক্ষ্য নেওয়া হয়। পরবর্তী সাক্ষ্য ও জেরার জন্য ৬ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
প্রথম মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। আদালতে তার সাক্ষ্য গ্রহণের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে তাকে জেরা করেন। এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২৯ সাক্ষীর মধ্যে সকলের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন রাজউকের গুলশান জোনের সাবেক পরিচালক তানজিল্লুর রহমান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস এম রাশেদুল হাসান। খুরশীদের পক্ষে এস এম রাশেদুল হাসানকে জেরা করা হয়। জেরার কাজ শেষ না হওয়ায় ৬ নভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণ ধার্য করা হয়েছে। এই মামলায় ২৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ এখনো হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন। এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২৩ জনের মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো. মইনুল হাসান লিপন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অপরদিকে বাকি ৩ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এসব মামলার একটিতে শেখ রেহানা, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৭ জন। আরেকটিতে আজমিনা, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন এবং অপর মামলায় রাদওয়ান, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।