September 11, 2025, 3:16 am
Headline :
আন্দোলন হাইজ্যাক হয়েছে, দাবি নেপালের তরুণদের নেপালে আটক বাংলাদেশিরা নিরাপদ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরবেন কুড়িগ্রামে বিজিবির অভিযান: ৭ দিনে ২ কোটি টাকার মাদক ও পণ্য জব্দ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরণের বাণিজ্য ও আকাশসীমা বন্ধ করেছে তুরস্ক গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার রাজশাহীতে কলাবাগান থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধারনিজস্ব প্রতিবেদক ১৬ গেট দিয়ে সাড়ে ৩ ফুট করে ছাড়া হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার যোগাযোগ বন্ধ ডাকসু নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী ‘জুলাই কন্যা’ তন্বী ডাকসুর জয়কে ‌‘জুলাই প্রজন্মের বিজয়’ বললেন নবনির্বাচিত ভিপি

এক নজরে রক্তাক্ত জুলাই

এক নজরে রক্তাক্ত জুলাই

জেডটিভি ডেস্ক,

শুরুতে ছিল কোটাবিরোধী আন্দোলন। নানা ঘটনাপ্রবাহে পরে তা রূপ নেয় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে। পতন ঘটে শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনের। কেমন ছিল জুলাইয়ের সেই রক্তাক্ত দিনগুলো এক ঝলকে দেখে নেয়া যাক।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বছরের ১ জুলাই থেকে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামেন শিক্ষার্থীরা। নানা ঘটনাপ্রবাহে এক পর্যায়ে তা রূপ নেয় সরকার পতনের এক দফায়।

ধাপে ধাপে ক্যাম্পাসের গণ্ডি পার হয়ে কর্মসূচি গড়ায় রাজপথে। দাবি আদায়ে প্রথম সপ্তাহে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, অবস্থান, রেলপথ-মহাসড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচিও পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

৭ জুলাই কর্মসূচিতে আসে ভিন্নতা। দেশজুড়ে পালিত হয় বাংলা ব্লকেড। স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। কোটাবিরোধী আন্দোলন যে বড় সংগ্রামে রূপ নিচ্ছে তার আঁচ পাওয়া যায় এই দিনেই।

ঘোষণা আসে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও। ১০ জুলাই সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেডে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রাজধানীর সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ। পরদিন আরও উত্তপ্ত রাজপথ। ঢাকা-চট্টগ্রামে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

এদিন দেশের অনেক স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। হামলার প্রতিবাদে পরদিন শুক্রবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ১৪ জুলাই, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনার বক্তব্য, আর রাতে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া মোড় ঘুরিয়ে দেয় দৃশ্যপটের।

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ চড়াও হলে পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পরদিন জুলাইয়ের প্রথম রক্তাক্ত দিন। রংপুরের আবু সাঈদ, চট্টগ্রামের ওয়াসিমসহ প্রাণ হারান ৬ জন। আহত হন কয়েকশ’। ১৭ জুলাই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে রাজপথে। ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে ছাত্রসমাজ, সরব হন বিচারের দাবিতে। সাড়া মিলতে থাকে নানা শ্রেণিপেশার মানুষের।

আন্দোলন দমনে পুলিশি হামলা, দফায় দফায় সংঘর্ষে গোটা দেশ পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। বন্ধ ঘোষণা করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদে পরদিন ১৮ জুলাই দেশজুড়ে পালিত হয় কমপ্লিট শাটডাউন। কর্মসূচি ঠেকাতে সারা দেশে মোতায়েন করা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে ঘটে ব্যাপক প্রাণহানি। বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট, চলতে থাকে ধরপাকড়। সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার কথা বলা হলেও তা প্রত্যাখান করে ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ ৯ দফা দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

২০ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারা দেশে কারফিউ ও সেনা মোতায়েন করা হয়। কারফিউর মধ্যেও অনেক জায়গায় চলে বিক্ষোভ, প্রাণ ঝরে রাজপথে।কাউফিউর মধ্যে ২১ জুলাই বসে সুপ্রিম কোর্ট। আপিল বিভাগের রায়ে ৭ শতাংশ কোটা রেখে বাকি ৯৩ শতাংশ পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নির্দেশনা আসে। কিন্তু ততদিনে ঝরে যায় শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণ।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে চিরুনি অভিযানের মধ্যে আটক হন ৬ সমন্বয়ক। প্রতিবাদে রাজপথে সক্রিয় হন শিক্ষক, শিল্পী সমাজসহ বিশিষ্ট নাগরিকরা। আর তাতে অনেকটাই মোড় ঘুরে যায় পরিস্থিতির।

৩০ জুলাইয়ের সরকারি শোক প্রত্যাখ্যান করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রোফাইল লাল করার ডাক দেয়া হলে মেলে ব্যাপক সাড়া। নানা মহলের দাবির মুখে অবশেষে ১ আগস্ট ডিবি কার্যালয় থেকে মুক্ত হন ৬ সমন্বয়ক। এদিনই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে জারি করা হয় প্রজ্ঞাপন।

২ আগস্টের দ্রোহযাত্রায় বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করেই প্রতিবাদের ভাষায় শামিল হন সব স্তরের মানুষ। পরদিন বদলে যায় আন্দোলনের গতিপথ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিশাল গণজমায়েত থেকে ঘোষণা করা হয় শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক দফা।

৪ আগস্ট দেশজুড়ে চলে অসহযোগ আন্দোলন। আর তা প্রতিহতে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন। বাধে সংঘর্ষ। এইদিনেই প্রাণ হারান শতাধিক মানুষ। জারি করা হয় অনির্দিষ্টকালের কারফিউ।

৫ আগস্ট কারফিউ উপেক্ষা করেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে সাড়া দিয়ে রাজধানীমুখী হয় ছাত্র-জনতা। পতন ঘটে টানা দেড় দশকের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার সরকারের। হেলিকপ্টারে চড়ে শেখ হাসিনা যখন ভারতের পথে, গণভবন তখন জনতার দখলে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page