নিজস্ব প্রতিবেদক :
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বুধবার সকালে ট্রাইব্যুনাল-১-এর তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন এই বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। সকাল থেকেই রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয় কাকরাইল, পল্টন, মৎস্য ভবনসহ আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে অভিযুক্তদের সবুজ রঙের একটি প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
কোন কারাগারে নেওয়া হবে?
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ১৫ জন অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে কোন কারাগারে তাদের রাখা হবে, সে সিদ্ধান্ত সরকার এবং কারা কর্তৃপক্ষ নেবে বলে জানান তিনি।
অভিযুক্তদের পরিচয়:
কারাগারে পাঠানো অভিযুক্ত সেনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন: র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম,ব্রিগেডিয়ার কে. এম. আজাদ,কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন,কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে)
এছাড়াও, র্যাব গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান,লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন,লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম,লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম
আরো রয়েছেন:
বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম ডিজিএফআইয়ের সাবেক তিন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
মামলার প্রেক্ষাপট :
আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে সংঘটিত গুম ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া মামলায় এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবারের শুনানিতে মোট তিনটি মামলার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। এসব মামলায় অভিযুক্ত রয়েছেন মোট ৩২ জন, যাদের মধ্যে ২৫ জনই বর্তমান ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা।