জবি প্রতিনিধি :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদল নেতা যুবায়েদ হোসেনের জানাজায় বাবা মোবারক হোসেন আবেগপ্রবণ কণ্ঠে বললেন, “আমি আমার ছেলেকে পড়াশোনা করানোর জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। আশা করেছিলাম সে বড় হয়ে আমার জন্য গর্বের কারণ হবে, চাকরি করবে, আমি তার মাধ্যমে সুখ পাব। কিন্তু আজ আমার সেই সন্তানকে লাশ হয়ে দেখতে হচ্ছে। এই ব্যথা আমি কীভাবে ব্যক্ত করবো?”
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দলীয় সহকর্মীদের উপস্থিতিতে যুবায়েদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
মোবারক হোসেন আরও বলেন, “আমি কীভাবে তার মাকে বলবো যে তার প্রাণের সন্তান আর নেই? আমার ছেলে আমার সঙ্গেই থাকতো, আমি যখন ঢাকায় ব্যবসার মাল কিনতে যেতাম সে আমার পাশে হাঁটতো, তার কাঁধে আমি ভর দিতাম।”
তিনি বলেন, “৫৮ বছরের জীবনে আমার সব অর্জন শেষ। আমার প্রাণের ছেলে আর নেই। আমি কোনো আশা বা আকাঙ্ক্ষা রাখি না, শুধু চাই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার হোক। সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।”
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াসউদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, সহ-সভাপতি কাজী জিয়াউদ্দিন বাসেত, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন, শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, ছাত্র অধিকারের সভাপতি এ কে এম রাকিব, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিনও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্যও ছিলেন। গত এক বছর ধরে তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন। রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় জবায়েদকে খুন করা হয়। তিনি সিঁড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।