October 27, 2025, 3:00 pm
Headline :
তথ্য অধিদপ্তরের ৪৫টি শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল চার মাসে মোংলায় নোঙর করেছে ২৫৫ বিদেশি জাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ওপর ইসরায়েলি ড্রোন ও ট্যাঙ্ক হামলা শুধুমাত্র কিছু আসনের জন্য এনসিপি জোট করবে না: সারজিস আলম প্রাথমিকের পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৬৪ পদে নিয়োগের ফল প্রকাশ বিএনপি তিন বছর আগে থেকেই সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছে: মঈন খান নির্বাচনের প্রস্তুতি ৯০-৯৫ শতাংশে: ইসি সচিব যুক্তরাষ্ট্রে ‘বেজবাবা’ সুমনের সঙ্গে মঞ্চ মাতালেন আসিফ আকবর পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি বিভাগ বন্ধ, কম শিক্ষার্থী ভর্তির কারণে জাপানে এক লাখ দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

চট্টগ্রামের ইপিজেডে আগুন, ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে বিধ্বস্ত ভবনটি, বেকারের শঙ্কায় শত শত শ্রমিক

চট্টগ্রামের ইপিজেডে আগুন, ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে বিধ্বস্ত ভবনটি, বেকারের শঙ্কায় শত শত শ্রমিক
ছবি: এআই দিয়ে বানানো হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক

চারদিকে ভাঙা কাঁচ, ধসে পড়া দেয়াল আর পুড়ে যাওয়া লোহার কাঠামো—চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইপিজেড) আটতলা ভবনটি এখন এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাত্র দুদিন আগেও যেখানে ব্যস্ততা ছিল শত শত শ্রমিকের, সেখানে এখন কেবল ধোঁয়া ওঠা ধ্বংসস্তূপ।

১৭ ঘণ্টা ধরে জ্বলতে থাকা এই আগুনে ভবনের একাংশ প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। আগুনে অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল প্রোডাক্টস (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের গুদাম সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন দুই প্রতিষ্ঠানের অন্তত পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।

আগুনের সূত্রপাত ও ভয়াবহতা

গত বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে ইপিজেডের আটতলা ভবনের সপ্তম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রায় ১৭ ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।

সুতা, তুলা, চিকিৎসা সামগ্রী ও মূল্যবান যন্ত্রপাতিসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল পুড়ে গেছে। আগুনের তাপে আশেপাশের ভবন পর্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, ধসে পড়ে ভবনের ছাদ ও দেয়ালের কিছু অংশ।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে মিলিতভাবে আগুন নেভাতে অংশ নেন।

আগুনে পুড়ে গেছে শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ

অ্যাডামস ক্যাপ অ্যান্ড টেক্সটাইলে কাজ করা অপারেটর শফিক আহমেদ এখন কাজহীন। আগুনের পরও তিনি এসে দাঁড়িয়েছেন প্রিয় কর্মস্থলের ধ্বংসস্তূপের সামনে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, “সব শেষ হয়ে গেছে। কারখানা পুড়ে ছাই, কাজও শেষ। এখন পরিবার নিয়ে বাঁচব কীভাবে বুঝতে পারছি না।”

অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের ফিন্যান্স ম্যানেজার রিফাত হাসান জানান, বেতন–ভাতা ও কারখানা পুনরায় চালু নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

তদন্ত কমিটি ও পুনর্গঠনের ঘোষণা

সিইপিজেড বেপজার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সোবহান জানান, আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “পুরো ভবনটি বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করানো হবে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঠেকাতে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে।”

এদিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য প্রতিষ্ঠান জিহং মেডিকেল প্রোডাক্টস (বিডি) কখন কাজ পুনরায় শুরু করবে তা এখনও অনিশ্চিত। চীনা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

শ্রমিকদের দুশ্চিন্তা

ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে এক নারী শ্রমিকের প্রশ্ন— “আমরা এখন কোথায় যাবো? সংসার চলবে কীভাবে?” কারখানার ভেতরে জ্বলেপোড়া মেশিন আর ধসে পড়া ছাদের দিকে তাকিয়ে অনেক শ্রমিকের চোখে শুধু হতাশা।

চট্টগ্রামের ইপিজেডের এই আগুন কেবল ভবনের দেয়াল ভেঙে দেয়নি—ভেঙে দিয়েছে শত শত শ্রমিকের জীবনের নিরাপত্তা আর ভবিষ্যতের স্বপ্নও।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page