নিজস্ব প্রতিবেদক:
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ফলাফলে দেখা দিয়েছে বড় ধস। পাসের হার নেমে এসেছে ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে এই হার ছিল ৭৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্য হলো, বোর্ডের অধীনে ৪৩টি কলেজ থেকে একজন পরীক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২০টি। অপরদিকে, শতভাগ পাস করেছে মাত্র ১১টি কলেজ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মীর সাজ্জাদ আলী সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
পাসের হার কমার চিত্র
দিনাজপুর বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫১ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৬০ হাজার ৮৮২ জন।ছাত্রদের পাসের হার: ৫২.৬৫%, ছাত্রীর পাসের হার: ৬১.৯২%
পাস করেনি যেসব কলেজ
রংপুর বিভাগের আট জেলার ৪৩টি কলেজ থেকে ১৮২ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে কেউই পাস করতে পারেনি।
এর মধ্যে রংপুরের ৪টি, নীলফামারীর ১০টি, কুড়িগ্রামের ৯টি, ঠাকুরগাঁওয়ের ৬টি, লালমনিরহাটের ৫টি, দিনাজপুরের ৪টি, পঞ্চগড়ের ৩টি এবং গাইবান্ধার ২টি কলেজ রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ— রংপুরের পায়রাবন্দ বেগম রোকেয়া স্মৃতি বালিকা কলেজে ৯ জন অংশ নিয়ে কেউ পাস করেনি নীলফামারীর বাগুলাগাড়ী স্কুল ও কলেজে ১৫ জন অকৃতকার্য। কুড়িগ্রামের রাশেদ খান মেনন কলেজে ১২ জন অংশ নিয়েও কেউ পাস করতে পারেনি। ঠাকুরগাঁওয়ের সালান্দর মহিলা কলেজে ৮ জন এবং পঞ্চগড়ের বোদা পাইলট বালিকা কলেজে ৮ জন পরীক্ষার্থীও অকৃতকার্য।
ফলাফল বিশ্লেষণ
এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ২৬০ জন, যেখানে গত বছর পেয়েছিল ১৪ হাজার ২৯৫ জন—অর্থাৎ কমেছে ৮ হাজার ৩৫ জন।
বিভাগভিত্তিক ফলাফল:
বিজ্ঞান বিভাগ: ২৬,১৬৬ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ ১৯,৫২৬ জন (পাসের হার ৭৬.১২%), মানবিক বিভাগ: ৭৪,৮০২ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ ৩৮,২৪১ জন (পাসের হার ৫২.৫১%), ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ: ৭,৬৯১ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ ৩,১১৫ জন (পাসের হার ৪২.০৫%)
বিশেষ পর্যবেক্ষণ
বোর্ড সূত্র জানায়, এ বছর ইংরেজি বিষয়ে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। তবে ছাত্রীদের ফলাফল তুলনামূলক ভালো — মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী ৩,৪৮৬ জন, আর ছাত্র ২,৭৭৪ জন। এ বছর দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ উভয়ই কমে যাওয়ায় শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।