নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির সঙ্গে অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলোর আসনভাগ নিয়ে জটিল এক দরকষাকষি চলছে। দলটি এবার সর্বোচ্চ ৪০টি আসন পর্যন্ত স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন।
মিত্র প্রার্থীর দাবিটি: বেশি
মুহূর্তের চাহিদা অনুযায়ী, বিভিন্ন মিত্র সংগঠন মিলিয়ে ২১৭টি আসনে প্রার্থী তালিকা জমায় দিয়েছিল। এর মধ্যে:
গণতন্ত্র মঞ্চ — ১৩৮টি
১২ দলীয় জোট — ২১টি
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট — ৯টি
এলডিপি — ১৩টি
জাতীয় পার্টি (বিজেপি) — ৫টি
গণফোরাম — ১৫টি
লেবার পার্টি — ৬টি
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) — ১০টি
তবে তথ্যভেদে জানা যায়, এসব দাবি থেকে কয়েকগুণ কম আসন বাস্তবপক্ষে ছেড়ে দেওয়া হবে — কারণ বিএনপির নিজস্ব প্রার্থী অনেক এলাকায় অনেক শক্তিশালী।
২০১৮ সালের প্রেক্ষাপট ও আজকের মনোভাব ২০১৮ সালে বিএনপি ৫৮টি আসনে তাদের মিত্রদের সুযোগ দিয়েছিল: জামায়াতে ইসলামীকে ২২টি এবং অন্য গোষ্ঠিগুলোকে ৩৬টি। এবার সেই স্ট্র্যাটেজি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত রয়েছে — বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীকে এবার সেভাবে ছাড় দেবে না বলে সূত্রগুলো বলছে। মিত্র দলের নেতাদের জনপ্রিয়তা মাপতে এবং মূল্যে যাচাই করতে বিএনপির একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। কিছু প্রার্থীর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদের জন্য নিশ্চিতভাবে সাংবিধানিক বা সাংসদীয় “মূল্যায়ন” দেওয়া হবে বলেও বলা হয়েছে। সম্ভাব্য ‘সবুজ সংকেত’ প্রার্থীদের তালিকা নির্দেশিকা অনুযায়ী, কিছু সম্ভাব্য আসন ও নেতার নাম ইতিমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে:
পিরোজপুর-১ — মোস্তফা জামাল হায়দার (জাপার)
লক্ষ্মীপুর-১ — শাহাদাত হোসেন সেলিম (এলডিপি)
কিশোরগঞ্জ-৫ — সৈয়দ এহসানুল হুদা (বাংলাদেশ জাতীয় দল)
বগুড়া-২ — মাহমুদুর রহমান মান্না (নাগরিক ঐক্য)
চট্টগ্রাম-১৪ — কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক (এলডিপি)
ঢাকা-৬ — অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী
ঢাকা-১৩ — এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ
ঢাকা-১৭ — বিএনপি ও বিএপির সমন্বিত প্রার্থী আন্দালিব রহমান পার্থ
এই নামগুলোর মধ্যে বেশ কিছু জনকে ইতোমধ্যে বিএনপি কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে ভূমিকা নেওয়ার কথা বলেছে, যাতে পার্শ্ব থেকে শক্তি বিনিয়োগভাবেও প্রশ্ন না ওঠে।
নীতিগত অবস্থান ও কৌশল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,
“আমরা যে দলগুলোর সঙ্গে রাজপথে সংগ্রাম করেছি, তাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই।”
সালাহউদ্দিন আহমদ (বিএনপি স্থায়ী কমিটি) মন্তব্য করেছেন,
“মিত্রদের কত আসন দেওয়া হবে, তা নির্ধারিত হবে আলোচনায়; তবে যে আসনগুলিতে জয় সম্ভাবনা বেশি, সেখানেই সুযোগ দেওয়া হবে।”
যদিও মিত্ররা বহু আসন দাবী করেছিল, বাস্তবে সেই দাবি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে না। বিএনপির অভ্যন্তরীণ শক্তি ও প্রার্থীর জবাবদিহিতা বিবেচনায় রেখে আসন ভাগাভাগিতে সম্ভাব্য টানাপোড়েন দেখা যেতে পারে। এসব ‘সবুজ সংকেত’ পেতে কাটা-ছাঁটা প্রক্রিয়া এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অপেক্ষার বিষয়।