October 27, 2025, 12:11 pm
Headline :
নির্বাচনের প্রস্তুতি ৯০-৯৫ শতাংশে: ইসি সচিব যুক্তরাষ্ট্রে ‘বেজবাবা’ সুমনের সঙ্গে মঞ্চ মাতালেন আসিফ আকবর পেশোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি বিভাগ বন্ধ, কম শিক্ষার্থী ভর্তির কারণে জাপানে এক লাখ দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের অগ্রগতি: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ কিবরিয়ার ৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, টাকার অঙ্ক ৩৮ লাখের বেশি ঢাবির জহুরুল হক হলে ধূমপান নিষিদ্ধ, মাদক সেবনে বহিষ্কার বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আমলাদের দায়িত্ব কমানো হবে: আমীর খসরু ৫৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সালমান এফ রহমানের সঙ্গে থাকা ১২ আসামির জামিন দীর্ঘ ২০ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন: পাকিস্তান বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ডেঙ্গুতে আরও ৬ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি প্রায় এক হাজার

ইসলামী ব্যাংকের ২০০ কর্মী চাকরিচ্যুত, প্রায় ৫ হাজার ওএসডি

ইসলামী ব্যাংকের ২০০ কর্মী চাকরিচ্যুত, প্রায় ৫ হাজার ওএসডি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে শুরু হয়েছে এক নজিরবিহীন শুদ্ধি অভিযান। চাকরিবিধি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪ হাজার ৯৭১ জনকে ওএসডি (অন সার্ভিস ডিউটি) করা হয়েছে। তারা বেতন-ভাতা পেলেও কোনো দায়িত্ব বা কর্মস্থলে থাকবেন না। এতে ব্যাংকের ভেতরে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
২০১৭ সালে চট্টগ্রামের প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে যোগ্যতা যাচাই ছাড়াই হাজারো কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এদের অধিকাংশই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, “অযোগ্য লোক নিয়োগ দিয়ে ব্যাংককে ধ্বংস করা হয়েছে। তাই ব্যাংকের স্বার্থেই সবাইকে যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে।”

পরীক্ষায় অনুপস্থিত হাজারো কর্মী
বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালতের নির্দেশে গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশেষ পরীক্ষা নেওয়া হয়। ৫ হাজার ৩৮৫ জনকে পরীক্ষায় ডাকলেও মাত্র ৪১৪ জন অংশ নেন। তারা নিয়মিত কাজে বহাল থাকছেন। কিন্তু পরীক্ষায় অনুপস্থিত ৪ হাজার ৯৭১ জনকে ওএসডি করা হয়েছে। আর যারা পরীক্ষার আয়োজন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০০ জনকে সরাসরি চাকরিচ্যুত করা হয়।

কর্মীদের পাল্টা দাবি
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা বলছেন, হাইকোর্ট এক মাস আগে নিয়মিত প্রমোশনাল পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। ব্যাংক সেই নির্দেশ অমান্য করে নতুন পরীক্ষা নিয়েছে, যা বেআইনি। তাই তারা আবার আদালতের শরণাপন্ন হবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেওয়া দেশে এই প্রথম। সাধারণত পদোন্নতির জন্য ভাইভা হয়, কিন্তু কর্মীদের মান যাচাই পরীক্ষার বিষয়টি নতুন অভিজ্ঞতা।” তিনি আরও জানান, ইসলামী ব্যাংক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় নিয়োগ ও যাচাই তাদের এখতিয়ার, তবে আইন ও নীতিমালা মানতেই হবে।

পটভূমি
এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণকালে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। এতে ব্যাংকটি বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়ে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংককে এস আলমের নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করে নতুন পর্ষদ নিয়োগ দেয়। এরপর থেকেই অযোগ্য নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের বাছাইয়ে বিশেষ পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

অনিশ্চয়তার ছায়া
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামী ব্যাংকের ভবিষ্যৎ এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে আদালত, বাংলাদেশ ব্যাংক ও কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর। ছাঁটাই প্রক্রিয়া চলমান থাকলে হাজার হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তবে আদালত কর্মীদের দাবি মেনে নিলে ব্যাংককে নতুন সমাধান খুঁজতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রক্রিয়া ইসলামী ব্যাংকের ভেতরে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একই সঙ্গে এটি দেশের ব্যাংক খাতে এক নতুন নজির, যেখানে কর্মীদের টিকে থাকার যোগ্যতা নির্ধারণে সরাসরি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page