নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্যে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে অপমানিত হয়েছিলেন।
২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন ও সেই সময় সংঘটিত সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত মামলায় তিনি ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে মঙ্গলবার আংশিক জবানবন্দি দেন। এ মামলার অপর আসামি ছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হয়েছেন।
নাহিদ ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে জানান, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ ও ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে আখ্যা দেন। ওই মন্তব্য সরকারের দমন–পীড়নকে বৈধতা দেয় এবং আন্দোলনের ন্যায্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে দাবি করেন তিনি।
এরপর রাতেই দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে। ১৭ জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই সংলাপে বসার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং একাধিক থানায় মামলা দায়ের হয়। একই রাতে ছাত্রনেতারা দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ডাক দেন।
১৮ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা রাজপথে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। নাহিদের ভাষায়, ওই সময় আন্দোলনকারী নেতারা প্রাণনাশের হুমকির মুখে আত্মগোপনে চলে যান। ১৮ ও ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে বহু শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হন। এ সময় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং গণমাধ্যম থেকে আন্দোলনের খবর প্রায় অদৃশ্য হয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ আজ নাহিদ ইসলামের আংশিক জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। আগামী বৃহস্পতিবার তার সাক্ষ্যগ্রহণের বাকি অংশ শোনা হবে।