নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। তবে এতে বাড়তি অর্থের চাপ মোকাবিলায় বিকল্প উৎস খুঁজছে সরকার। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, নতুন বেতন কাঠামো চালু হলে ব্যয় বাড়লেও রাজস্ব আদায়ও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। সম্প্রতি জাতীয় পে-কমিশনে পাঠানো মতামতে অর্থ বিভাগ বলেছে, ২০১৫ সালের পর এক দশক পার হলেও চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি। ফলে বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস জরুরি হয়ে পড়েছে।
অর্থ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, বেতন বাড়ানোর ফলে একদিকে সরকারের ব্যয় বাড়বে, অন্যদিকে চাকরিজীবীদের আয়কর ও সরকারি বাড়িভাড়া থেকে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। কারণ নতুন কাঠামোয় সর্বনিম্ন বেতন ৮,২৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৬ হাজার টাকার বেশি হতে পারে, যা করযোগ্য আয়ের আওতায় পড়বে। এছাড়া সরকারি আবাসনে বসবাসকারী কর্মকর্তাদের বাড়িভাড়ার হার সমন্বয় করা হলে সেখান থেকেও অতিরিক্ত রাজস্ব আসবে বলে মনে করছে অর্থ বিভাগ। জাতীয় পে-কমিশনের চেয়ারম্যান সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান বলেন, “আমাদের হাতে সীমিত সম্পদ রয়েছে। তার মধ্যেই সর্বোচ্চ বাস্তবসম্মত বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, “নতুন বেতন কাঠামো অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই গ্যাজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এর জন্য চলতি অর্থবছরের (২০২৫–২৬) সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে।” তিনি আরও বলেন, মার্চ বা এপ্রিলে পে-স্কেল কার্যকর করতে হলে ডিসেম্বরেই বাজেট সংশোধনে তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পে-কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্য ন্যায়সঙ্গত ও সময়োপযোগী বেতন কাঠামো প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। অনলাইনে প্রাপ্ত মতামত যাচাই-বাছাইয়ের পর দ্রুতই চূড়ান্ত সুপারিশ সরকারকে দেওয়া হবে।অর্থ বিভাগের মতে, নতুন পে-স্কেল শুধু চাকরিজীবীদের আয় বাড়াবে না, বরং রাজস্ব আদায় ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায়ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।